স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জে সুরমানদীসহ অন্যান্য নদ নদীর পানি কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের নির্ধারিত পয়েন্ট কেটে দিয়ে হাওরে পানি ঢোকানোর ফলে নদীর পানি কিছুটা কমছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে পানিশুন্য হাওরে পানি প্রবেশের ফলে মাছের ডিম পাড়ার এই সময়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। গতকাল শুক্রবারও জেলার ৭টি উপজেলায় ফসলরক্ষা বাধ নির্মাণ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভিন্ন পয়েন্টে বাধ কেটে হাওরে পানি ডুকানো হচ্ছে। এতে নদীতে পানি কমছে। তাছাড়া মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত কমায় এবং ভাটিতেও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় নদ নদীর পানি কমছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার বলেন, ভারতের মেঘালয়ে গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। একারণে পানির টান কমেছে। তাছাড়া আমরা হাওরের ফসলরক্ষা বাধ নির্মাণ কমিটির সংশ্লিষ্টরা প্রতিটি উপজেলা কমিটির সংশ্লিষ্টদের বাধের নির্ধারিত পয়েন্টে কেটে পানি ডুকানোর নির্দেশনা দিয়েছি। বৃহষ্পতিবার থেকে ধর্মপাশা, তাহিরপুর, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারা, জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওরে বাধ কেটে পানি ডুকানো হচ্ছে। আজ শনিবারও দিরাই শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বাধ কেটে হাওরে পানি ডুকানো হবে। তিনি বলেন, হাওরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এবং জলজ জীববৈচিত্রের সুরক্ষার জন্য হাওরে পানি জরুরি। হাওরে কোন ফসল না থাকায় বাধ কেটে পানি ডুকানো হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, বৃহষ্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হাওরে পানি কিছুটা বেড়েছিল। তবে বিকেল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এখনো সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার নিচে আছে। শুক্রবার বিকেলে সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমার পানি ৭.২৪ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও মেঘালয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
হাওর বাচাও আন্দোলনের সহসভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, ধান কাটার প্রায় মাস খানেক হয়ে গেছে। ধান কাটার পরপরই বাধ কেটে পানি ডুকালে মাছের উৎপাদন বাড়তো। কারণ তখন নদীতে পানি ছিল। মাঝে তীব্র তাপদাহে হাওর শুকিয়ে গিয়েছিল। ডিম ছাড়ার সময়ে এ অবস্থায় ডিম নষ্ট হয়ে গেছে। তবে বিলম্বে হলেও বাধ কেটে পানি ডুকানোর কারণে মাছের উৎপাদন বাড়বে ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদেরও উপকার হবে।
(ফাইল ছবি, ২০২৩)