হাওর ডেস্ক::
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জাতীয় অর্জন কী কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে নিশ্চয়ই শুরুর দিকেই থাকবে পদ্মা সেতুর নাম।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, কল্পিত অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক এর সরে যাওয়ার পরও, স্বপ্ন সেতুর সংযোগ ঘটে নিজেদের টাকায়। তাই পদ্মা সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি বাঙালির হার না মানার প্রতীকও।
অহংকারের সেই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাদের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মাগুরখণ্ডে বেশ কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২০২০ সালের জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত মাদারীপুরের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ছিলেন প্রমথ রঞ্জন ঘটক। তিনি জেলা প্রশাসকের মৌখিক নির্দেশ অমান্য করে, সেই এলাকার খাস জমিকে অধিগ্রহণ দেখিয়ে ৫ জনের নামে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার চেক ইস্যু করেন।
আরও পড়ুন: বেনজীর এখন কোথায়, বাচ্চু-পিকের মতো পার পেয়ে যাবে না তো?
শুধু তাই নয়, ইস্যুকৃত চেকগুলোর ক্ষমতাপত্র সম্পাদন ২০২১ এর ১১ জুলাই হলেও এই কর্মকর্তা পেছনের তারিখ দেখিয়ে চেকগুলো স্বাক্ষর করেন। কারণ মাদারীরপুরে তার শেষ কর্ম দিবস ছিল ওই বছরের জুন পর্যন্ত।
অপকর্মের শাস্তি হিসেবে, আগামী তিন বছরের জন্য প্রমথ রঞ্জন ঘটককে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে পদাবনতি করে সহকারী সচিব করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। শাস্তির কারণে ষষ্ঠ গ্রেডে থাকা এ কর্মকর্তা নবম গ্রেডের বেতন-ভাতা পাবেন। তবে তিন বছর পর আবার বহাল হবেন আগের পদেই।
সময় সংবাদের সাথে কথা বলছেন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে পদাবনতি পাওয়া সহকারী সচিব প্রমথ রঞ্জন ঘটক।
বর্তমানে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সহকারী পরিচালক পদে আছেন এই কর্মকর্তা। অন্তত দুই সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও দেখা দেননি তিনি।
অবশেষে জামুকার মহাপরিচালকের নির্দেশে তিনি সাক্ষাৎ করার সুযোগ দেন সময় সংবাদকে। জানতে চাই, যে ৫ ব্যক্তির নামে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার চেক ইস্যু করা হয়েছিলো সেই টাকার গন্তব্য কোথায় ছিল। জবাবে প্রথম রঞ্জন ঘটক বলেন, ‘যে পাঁচজন ব্যক্তির নামে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে, তাদের নামেই চেক হয়েছে। আমি যখন তাদের কাগজপত্র দিয়েছি আমার জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব, যাচাই-বাছাই করে ওই পাঁচজনকেই চেক দেয়া হয়েছে।’
তাহলে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে, সেটা অন্যায় হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা অন্যায় করেছে কি করেনি, এটাতো আমি বলতে পারব না। আমার কর্তৃপক্ষ দিয়েছে, তারা বলতে পারবে।’
আরও পড়ুন: অবসরের তিন বছর পর জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র
এ প্রসঙ্গে সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, এমন শাস্তি অপরাধ কমাতে সহায়ক হবে না। অভিযোগ খুবই গুরুতর। এসব ক্ষেত্রে কাউকে চাকরিতে রাখা উচিত না। এটা সবার কাছে একটা খারাপ বার্তা যায় যে, আপত্তিকর কিছু করলেও পার পাওয়া যায়।
এদিকে এমন গুরুতর অভিযোগে লঘুদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ সচিবালয়ের একাধিক সিনিয়র সচিবও।