হাওর ডেস্ক::
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে দেশের ২০ জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক পরিমাণ ৬ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার বেশি বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান।
রোববার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ ঘূর্ণিঝড়ে জনপদের পাশাপাশি পায়রা নদীর ড্রেজিং ও উপকূলীয় বেড়িবাঁধগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গত ২৬ মে রাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সরকারি হিসাবে, ঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে, ঘর ভেঙে ও দেয়াল ধসে পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, ভোলা, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঝড়ের মধ্যে জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে উপকূলের বহু জনপদ তলিয়ে যায়। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ২০ জেলায় ৬ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক হিসেবে বেরিয়ে এসেছে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি আরো বেশি। মন্ত্রণালয়গুলো থেকে আগামী ৯ জুনের মধ্যে সব হিসাব পেয়ে জানানো হবে।
“আমরা গত কয়েকদিন থেকেই দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। সরকারের সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দুর্যোগপূর্ব কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।”
ঘূর্ণিঝড়ে পায়রা বন্দরের পাশে পায়রা নদীর চলমান ড্রেজিং কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশপাশ থেকে পলি এসে নদীর ড্রেজিং কাজ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। একইভাবে অনেক দিনের পুরোনো বেড়িবাঁধগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন আধুনিক বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করা হবে।
সরকারের ত্রাণ তৎপরতার তথ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ১৯টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নগদ পাঁচ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, পাঁচ হাজার ৫০০ টন চাল, নয় হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ২০০ বান্ডেল ঢেউটিন, গো- খাদ্যের জন্য দুই কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং শিশু খাদ্য কেনার জন্য দুই কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
গত ৩০ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিদুর্গত এলাকা পরিদর্শনের জন্য পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় যান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ-সামগ্রী বিরতণ করেন।
দক্ষিণাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় আক্রান্তের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যা দুর্গত এলাকায়ও ত্রাণ বিতরণ করার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
গত কয়েকদিন ধরে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও দিনাজপুর জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার্তদের সাহায্যার্থে সিলেট জেলায় ২০ লাখ টাকা, ৫০০ টন চাল, ১০ লাখ টাকার গো-খাদ্য এবং ১০ লাখ টাকার শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলায় ১৫ লাখ টাকা, ৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য এবং ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
একইভাবে দিনাজপুর জেলায় ১৫ লাখ টাকার নগদ অর্থ এবং ৩ লাখ টাকার শুকনো ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ করার কথা জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।