1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে উজ্জীবিত আফগানিস্তানের ইতিহাস গড়ল

  • আপডেট টাইম :: রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪, ১১.৩৯ এএম
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::
আজমতউল্লাহ ওমারজাইয়ের শর্ট বল উড়িয়ে মারলেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। লং অনে মোহাম্মদ নাবি সহজ ক্যাচ নিতেই উল্লাসে মাতোয়ারা আফগানিস্তান। বোলিং কোচ ডোয়াইন ব্রাভো সবার আগে ঢুকলেন মাঠে। একে একে যোগ দিলেন কোচিং স্টাফের অন্যরাও। আর মাঠে তখন আনন্দে যেন দিশেহারা রাশিদ খান, গুলবাদিন নাইব, ফাজালহাক ফারুকিরা। গ্যালারিতে সমর্থকদের মুখে হাসি আর চোখের কোনায় চিকচিক করছে আনন্দাশ্রু।

বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস এ দিন আফগানদের মানায়। তিন সংস্করণ মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছয় ম্যাচে প্রথম জয় বলে কথা! সেটিও বিশ্বকাপের মঞ্চে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে খুব কাছে গিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি তারা। এবার ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে দাপট দেখিয়ে ২১ রানে জিতল রাশিদ খানের দল। একইসঙ্গে তারা বাঁচিয়ে রাখল সেমি-ফাইনাল খেলার আশা।

সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে ১৪৮ রানের পুঁজি নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১২৭ রানে গুটিয়ে দেয় আফগানিস্তান।

নতুন বলে অসাধারণ এক স্পেলে দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন নাভিন-উল-হাক। পরে সেখানেই জয়ের সৌধ গড়েন গুলবাদিন নাইব। মন্থর ও কিছুটা অসম বাউন্সের উইকেটে নিখুঁত লাইন-লেংথ, গতি বৈচিত্র ও বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন তিনি। অষ্টম বোলার হিসেবে উইকেটে এসে জেন্টল মিডিয়াম পেস দিয়ে ৪ ওভারে ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই ম্যাচের সেরা।

আলাদা করে তুলে ধরতে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানদের অবদানকেও। ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে দুজনের শতরানের জুটিই আফগানদের এনে দেয় জয়ের সাহস, বাড়িয়ে দেয় স্বপ্নের পরিধি।

ভারতে গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও অস্ট্রেলিয়াকে বাগে পেয়েছিল আফগানিস্তান। ২৯১ রানের পুঁজি নিয়ে মাত্র ৯১ রানে তারা নিয়েছিল ৭ উইকেট। কিন্তু গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য ডাবল সেঞ্চুরিতে অনেক দিন মনে রাখার মতো জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।

বছর ঘোরার আগে ভিন্ন সংস্করণের বিশ্বকাপেও আফগান শিবিরে সেই শঙ্কা ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। অন্যদের ব্যর্থতার মাঝে একাই লড়াই করে তিনি জিইয়ে রাখেন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের আশা। কিন্তু দিনটি তো নাইব ও আফগানদের! ১৫তম ওভারে নাইবের বলেই নুর আহমাদের দারুণ ক্যাচে ম্যাক্সওয়েল বিদায় নেওয়ার পর আফগানদের জয়ে আর কেউ বাধা হতে পারেনি।

৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ বলে ৫৯ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি আরেকটি স্মরণীয় ইনিংস খেলতে। আফগান বোলারদের তোপে আর কোনো ব্যাটসম্যান ১৫ রানও করতে পারেননি। ১০ বলের বেশি খেলতে পারেন শুধু মার্কাস স্টয়নিস।

ম্যাচে টস থেকেই যেন একটু একটু করে পেছাতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। সেন্ট ভিনসেন্টে আগের তিন ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা দল জেতার পরও টস জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান মিচেল মার্শ। স্পিনে শক্তি বাড়াতে মিচেল স্টার্ককে বাইরে রেখে ফেরানো হয় অ্যাশটন অ্যাগারকে।

অস্ট্রেলিয়ার চ্যালেঞ্জ সামলে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরু করেন ছন্দে থাকা দুই ওপেনার গুরবাজ ও ইব্রাহিম। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪০ রান যোগ করেন তারা দুজন। অষ্টম ওভারে পঞ্চাশ পূর্ণ হয় আফগানিস্তানের।

উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে না পারার হতাশায়ই হয়তো এলোমেলো বোলিং-ফিল্ডিং শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার। একাদশ ওভারে পরপর দুই বলে রান আউটের হাত থেকে বেঁচে যান দুই ওপেনার।

পরের ওভারে ইব্রাহিমের ফিরতি ক্যাচ নাগালে পেলেও হাতে জমাতে পারেননি মার্কাস স্টয়নিস। ৩২ রানে বেঁচে যান ইব্রাহিম।

দ্বাদশ ওভারে জ্যাম্পার বল ছক্কায় ওড়ান গুরবাজ। এক বল পর দারুণ ডেলিভারিতে তাকে পরাস্ত করেন জ্যাম্পা। কিন্তু স্টাম্পের পেছনে স্টাম্পিং করতে পারেননি ম্যাথু ওয়েড। ৪৭ রানে জীবন পান গুরবাজ।

এক ওভার পর পূর্ণ হয় এই জুটির শতরান। চলতি বিশ্বকাপে এটি তাদের তৃতীয় শতকছোঁয়া বন্ধন। আর কোনো দলের ওপেনাররা একটিও একশ রানের জুটি গড়তে পারেননি। টুর্নামেন্টের এক আসরে এটিই রেকর্ড।

ষোড়শ ওভারে গুরবাজকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মার্কাস স্টয়নিস। ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫১ বলে ৬০ রান করা গুরবাজকে আউট করে উদযাপনে তাকে ড্রেসিং রুমে ফেরার পথ দেখিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়া অলরাউন্ডার।

গুরবাজের বিদায়ের পর আর কাঙ্ক্ষিত গতি পায়নি আফগানিস্তানের ইনিংস। শেষের ২৭ বলে মাত্র ৩০ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। ৬ চারে ৪৯ বলে ৫১ রান করেন ইব্রাহিম। শেষ দিকে নাবির ৪ বলে ১০ রানের ইনিংসে দেড়শর কাছাকাছি যায় আফগানরা।

অষ্টাদশ ওভারের শেষ বলে রাশিদ খান এবং শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে কারিম জানাত ও গুলবাদিন নাইবকে ফিরিয়ে পরপর দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন প্যাট কামিন্স। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা হ্যাটট্রিকের এটিই প্রথম কীর্তি। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি।

শেষ ওভারের তৃতীয় বলে নানগেলিয়া খারোটের ক্যাচ ছাড়েন ডেভিড ওয়ার্নার। নইলে চার বলে চার উইকেট পেতে পারতেন কামিন্স।

আফগান ইনিংসের শেষটা ভালো না হলেও উইকেটের বিবেচনায় পুঁজি ছিল যথেষ্টই ভালো। পরে তা প্রমাণ করেই দেন আফগানরা। এই উইকেটের উপযোগী বোলারের অভাব ছিল না তাদের। সেই ফায়দা তারা পুরোপুরি নেন। অষ্টম বোলার নাইব গড়ে দেন বড় পার্থক্য।

নতুন বলে ফারুকির বদলে আক্রমণে আনা হয় নাভিনকে। তৃতীয় বলে উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে ব্যাটেই লাগাতে পারেননি ট্রাভিস হেড। বোল্ড হয়ে খালি হাতে ড্রেসিং রুমে ফেরেন তিনি। পরের ওভারে মার্শকেও ফেরান নাভিন।

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে আসা নাবির বল স্লগ সুইপ করার চেষ্টায় ওয়ার্নারের ব্যাটের ওপরের দিকে লাগে। শর্ট ফাইন লেগে ভালো ক্যাচ নেন নুর আহমাদ। পাওয়ার প্লে শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৩৩ রান।

এরপর স্টয়নিসকে নিয়ে ম্যাক্সওয়েলের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। ৩২ বলে দুজন মিলে যোগ করেন ৩৯ রান। একাদশ ওভারে বোলিংয়ে এসে তৃতীয় বলে জুটি ভাঙেন গুলবাদিন। হালকা লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ১৭ বলে ১১ রান করা স্টয়নিস।

বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি টিম ডেভিড। তবু দমে যাননি ম্যাক্সওয়েল। রাশিদ খানের বলে সুইপ করে মারেন ছক্কা। গুলবাদিনের পরপর দুই ওভারে মারেন দুটি বাউন্ডারি। খেলার ধারার বিপরীতে মাত্র ৩৫ বলে ফিফটি করেন ম্যাক্সওয়েল।

ম্যাক্সওয়েলের পিঠে চড়ে চতুর্দশ ওভারে একশ পূর্ণ করে ভালোভাবেই জয়ের পথে ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তাকে আরেকবার নায়ক হতে দেননি নাইব। অস্ট্রেলিয়াও আর পারেনি। ২১ রানের মধ্যে শেষ ৫ উইকেট নিয়ে অবিস্মরণীয় এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রাশিদ খানের দল।

আফগানিস্তানের জয়ে জমে উঠল সুপার এইটের প্রথম গ্রুপ। দুই ম্যাচের দুটিই জেতা ভারত সবচেয়ে নিরাপদ অবস্থানে। একটি করে জয় পাওয়া অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের অপেক্ষা শেষ ম্যাচের। এমনকি দুটি হারের পরও টিকে আছে বাংলাদেশের সেমি-ফাইনাল খেলার আশা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪৮/৬ (গুরবাজ ৬০, ইব্রাহিম ৫১, ওমারজাই ২, জানাত ১৩, রাশিদ ২, নাবি ১০*, গুলবাদিন ০, নানগেলিয়া ১*; অ্যাগার ৪-১-১৭-০, হেইজেলউড ৪-০-৩৯-০, কামিন্স ৪-০-২৮-৩, জ্যাম্পা ৪-০-২৮-২, ম্যাক্সওয়েল ২-০-১২-০, স্টয়নিস ২-০-১৯-১)

অস্ট্রেলিয়া: ১৯.২ ওভারে ১২৭ (হেড ০, ওয়ার্নার ৩, মার্শ ১২ ম্যাক্সওয়েল ৫৯, স্টয়নিস ১১, ডেভিড ২, ওয়েড ৫, কামিন্স ৩, অ্যাগার ২, জ্যাম্পা ৯, হেইজেলউড ৫*; নাভিন ৪-০-২০-৩, ফারুকি ৩-০-২১-০, ওমারজাই ১.২-০-৯-১, নাবি ১-০-১-১, নানগেলিয়া ১-০-১৩-০, রাশিদ ৪-০-২৩-১, নুর ১-০-১১-০, গুলবাদিন ৪-০-২০-৪)

ফল: আফগানিস্তান ২১ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: গুলবাদিন নাইব

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!