হাওর ডেস্ক::
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শামসুদ্দোহা খন্দকার ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযোগপত্রে তাদের বিরুদ্ধে ৩৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন এবং তাদের ব্যাংক হিসাবে ৬৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথাও বলা হয়েছে অভিযোগপত্রে।ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালতে আজ মঙ্গলবার এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মো. শামসুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনসহ বিদেশে অর্থপাচারের প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
“তিনি এবং তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে শামসুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ গোপনসহ ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ৩৭৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং বিভিন্ন ব্যাংকে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার সন্দেহজনক তথা অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়া হয়।
“এছাড়া শামসুদ্দোহার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার সম্পদ গোপনসহ ২৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকার পেশায় একজন গৃহিনী হলেও বিভিন্ন ব্যাংকে ৪১ কোটি ২৮ লাখ টাকার সন্দেহজনক তথা অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে বলে জানান দুদক সচিব খোরশেদা।
মামলা দুটি দায়ের করেছিলেন দুদকের সাবেক উপ পরিচালক (বর্তমানে পিআরএলে) শাহীন আরা মমতাজ। আর তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এর আগে ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আদালতের আদেশে শামসুদ্দোহা ও তার স্ত্রীর নামে ২৬টির দলিলের বিপরীতে বিভিন্ন স্থাবর সম্পদ ক্রোক করে দুদক। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার নবাবগঞ্জে ১২.৮৭ একর জমিতে ওয়ান্ডারেলা গ্রিন পার্ক, নিকুঞ্জ ও পুলিশ হাউজিং সোসাইটির জমি ও ওয়ান্ডারেলা গ্রিন পার্কের বিভিন্ন ধরনের রাইড।
২০১১ সালের অক্টোবরে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান পদে যোগ দেওয়ার আগে শামসুদ্দোহা খন্দকার পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ছিলেন।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠলে ২০১৫ সালে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সম্পদের তথ্য চেয়ে একাধিকার নোটিস দিলেও জবাব দেননি শামসুদ্দোহা খন্দকার।
২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে এই দম্পতির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার পর তারা আদালতের মাধ্যমে সম্পদ বিবরণী জমা দেন।