হাওর ডেস্ক::
কট্টর রক্ষণশীল সাইদ জালিলিকে হারিয়ে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত মাসুদ পেজেশকিয়ান।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ শেষে সাড়ে তিন কোটি ভোট গণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে পেজেশকিয়ান পেয়েছেন এক কোটি ৬৩ লাখ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাইদ জালিলি পেয়েছেন এক কোটি ৩৫ লাখ ভোট।
এ দফায় ভোট পড়ার হার ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া ভোটের এই তথ্য প্রকাশ করেছে প্রেস টিভি।
“শুক্রবারের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পাওয়ায় পেজেশকিয়ান ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন,” জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ২৮ জুন প্রথম দফার নির্বাচনে কোনো প্রার্থী সংগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থী পেজেশকিয়ান ও জালিলির মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নিতে শুক্রবার দ্বিতীয় দফা ভোট হয়।
প্রথম দফা নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৪০ শতাংশ, যা ইরানের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।
গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
ভোটের ফলাফলে সাবেক হৃদরোগ চিকিৎসক পেজেশকিয়ানের জয়ের খবর আসতে থাকায় রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে তার সমর্থকদের উৎসবে মেতে উঠতে দেখা দেছে সামাজিক মাধ্যমে আসা বিভিন্ন ভিডিওতে।
ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, তরুণ সমর্থকরা পথে পথে নেচে-গেয়ে আনন্দ করছেন, অনেককে উচ্চশব্দে হর্ণ বাজিয়ে এবং পেজেশকিয়ানের নির্বাচনি সবুজ পতাকা নেড়ে গাড়ি চালাতেও দেখা গেছে।
ইরানের ‘কুখ্যাত’ নীতি পুলিশের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাবেক হৃদরোগ সার্জন পেজেশকিয়ান ‘ঐক্য এবং সংহতির’ পাশাপাশি বিশ্বের সঙ্গে ইরানের ‘দূরত্ব’ ঘোচানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আলোচনায় আসেন।
তিনি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি নবায়নে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সঙ্গে নতুন করে গঠনমূলক আলোচনা শুরু করার কথাও বলেছেন।
ওই চুক্তি অনুযায়ী পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিলের বিনিময়ে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে সম্মত হয়েছিল।
অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বি সাইদ জালিলি ছিলেন স্থিতিশীলতার পক্ষে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সমর্থক জালিলি সবসময়ই দেশটির ধর্মীয় গোষ্ঠীর শক্ত সমর্থন পেয়েছেন।
পশি্চমাদের কঠোর সমালোচক জালিলি পারমাণবিক চুক্তি নবায়নেরও বিরোধী।
প্রাথমিক বিভিন্ন জরিপে ধারণা করা হয়েছিল, প্রথম দফার নির্বাচনের চেয়ে বেশি মানুষ শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় ভোট দেবেন।
প্রথম দফায় যারা ভোট দেননি, ভোটারদের এমন বড় একটি অংশ জালিলির প্রেসিডেন্ট হওয়া ঠেকাতে দ্বিতীয় দফায় পেজেশকিয়ানকে ভোট দিতে উৎসাহী হয়ে উঠেছিলেন।
এই ভোটারদের শঙ্কা ছিল, জালিলি প্রেসিডেন্ট হলে ইরানের সঙ্গে বিহির্বিশ্বের দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হবে এবং তিনি আরো নিষেধাজ্ঞা ও বিচ্ছিন্নতা ছাড়া ইরানকে আর কিছুই দিতে পারবেন না।