হাওর ডেস্ক::
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে বাড়ির সামনের বোরো ফসলের জমিতে মাছ ধরতে গিয়ে পিছগাং সোমেশ্বরী নদী নামীয় জলমহালের ইজারাদারের লাঠিয়াল পাহারাদার বাহিনীর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলায় দুই কৃষক ও এক শিশু আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের চামরদানী গ্রাম সংলগ্ন বাড়ির পাশের বোরো ফসলের জমিতে দুই কৃষক ও এক শিশুর উপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত কৃষকেরা হলেন- চামরদানী গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে খাইরুল ইসলাম (৩৩) তার শিশু কন্যা শরিফা আক্তার (১০) ও একই গ্রামের মেন্দু মিয়ার ছেলে নুরজামাল (৩৮)।
আহত দুইজনকে চিকিৎসার জন্য ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শিশু শরীফাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহতদের স্বজনেরা জানান, মঙ্গলবার বিকালের দিকে চামরদানী গ্রামের পাশে বোরো ফসলের জমিতে দুই হতদরিদ্র কৃষক খাইরুল ও নুরজামাল বাইর (ছোট মাছ ধরার উপকরণ) দিয়ে খাওয়ার জন্য মাছ ধরতে যান। সেখানে কান্দার হিজল গাছের ঝোপের আড়ালে তখন ওৎপেতে ছিল সোমেশ্বরী পিছগাং জলমহালের পাহারাদার বাহিনী। ওই জলমহালের পাহারাদার বাহিনীর প্রধান সৈয়দ আলী (৪৭) এর নেতৃত্বে হামলাকারী লিটন (৩৫), শাহআলম (৩৮), জুয়েল (৪৫), শহীদুর (৪২)সহ আরও কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটায়।
উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের চামরদানী গ্রামের লোকজন জানান, সোমেশ্বরী পিছগাং জলমহালের ইজারাদারের পাহারাদার বাহিনী তাঁদের জলমহালের সীমানার বাহিরে চামরদানী গ্রাম সংলগ্ন কৃষি জমিতে দরিদ্র কৃষক ও জেলেদের মাছ ধরতে বাঁধা দেয়। মাছ ধরতে গেলে দরিদ্র কৃষক ও জেলেদের উপর বিভিন্ন সময় অতর্কিত হামলা চালায়। একফসলী এই এলাকার দরিদ্রপীড়িত কৃষক ও জেলেদের দৈনন্দিন খাবারের জন্য বাড়ির সামনে নিজেদের জমিতে মাছ ধরার সুযোগের দাবীতে গত ৯ জুলাই মধ্যনগর বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে সোমেশ্বরী পিছগাং জলমহালের সীমানা নির্ধারণ করার দাবী জানান মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা। ওই কর্মসূচিতে চামরদানী ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশ জেলে-কৃষক অংশ গ্রহন করেন। এরপর থেকে কৌশলে স্থানীয় কৃষক-জেলেদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল জলমহালের ইজারাদার ও তাদের লাঠিয়াল বাহিনী। মঙ্গলবার বিকালে চামরদানী গ্রাম থেকে বাড়ির সামনের বোরো ফসলের জমিতে মাছ ধরতে গেলে ইজারাদারের পেটুয়া পাহারাদার বাহিনী দরিদ্র কৃষকদের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় এ হামলার ঘটনা ঘটায়। তাদের হামলা থেকে শিশু শরীফা আক্তারও রক্ষা পায়নি।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।