অনলাইন::
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে রাজধানীসহ সারাদেশে আজ পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন আজ নানা কর্মসূচি পালন করে।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং তাজিয়া মিছিল।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আজ ছিল সরকারি ছুটির দিন। সংবাপত্র ও বিভিন্ন গণমাধ্যম এই উপলক্ষে আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে গতকাল শনিবার বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মোঃ মোজাহারুল মান্নান।
আশুরা উপলক্ষে আজ সকাল ১০টার পর রাজধানীর হোসেনী দালান থেকে তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। হোসেনী দালান ইমামবাড়ি থেকে তাজিয়া মিছিলটি বের হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউমার্কেট হয়ে ধানমন্ডি গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকার দক্ষিণখানস্থ জামিয়া মাদানিয়ার মুহতামিম শায়খুল হাদিস আল্লামা মনিরুজ্জামান রাব্বানী ও বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। প্রায় ১ হাজার ৩৩৫ বছর আগে এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা:) কারবালা প্রান্তরে তাঁর ৭২ জন অনুসারিসহ ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে শহীদ হন। ১০ মহররম হযরত ইমাম হোসেইন (রা:) এবং তাঁর পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনা স্মরণ করেই বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় যথাযোগ্য মর্যাদায় এই দিবসটি পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্বত রাখতে তাঁদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন, বাংলাদেশ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে।
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন আজ হোসেনি দালান পরিদর্শন করেন। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গড়পাড়া ইমাম বাড়িতে ১০ দিন ব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করে। হিজরী সালের প্রথম মাস ‘মহররমের’ চন্দ্রোদয়ের দিন থেকে ইমাম বাড়ি প্রাঙ্গণে কারবালার শোককে স্মরণ করে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এরমধ্যে মিলাদ, ফাতিহা, নেয়াজ, মার্সিয়া-মাতম। চন্দ্রোদয়ের দিন সন্ধ্যায় বেজে উঠেছে ইমাম বাড়ীর দামামা। কারবালার যুদ্ধের স্মরণে প্রায় শতবর্ষ যাবৎ সংরক্ষিত আছে এ বিশাল ডঙ্কা।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছে। রাজধানীর পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জের বিবিকা রওজা, পুরানা পল্টন, মগবাজার, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প ও মিরপুরের বিহারি ক্যাম্পগুলোয় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পবিত্র আশুরা পালিত হয়।