অনলাইন::
সকাল থেকে ঠাঁয় বসে। হাতে ডাক্তার দেখানোর টিকিট। মঙ্গলবার ডাক্তার দেখাবেন, তা আগে থেকেই ঠিক করা। কখন খুলবে হাসপাতালের গেট! কখন মিলবে ডাক্তার! অপেক্ষার প্রহর যেন ফুরায় না। অবশেষে ডাক্তারের সাক্ষাৎ মিলল বটে, তবে জ্ঞান হারানোর পর।
হেমন্তের সকাল দুপুরে আসতেই রোদের তেজ বাড়ছিল। অতটুকু রোদও তার সইছিল না। গাল বেয়ে দরদর করে ঘাম ঝরছিল সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা খায়রুন্নেসার। বহুবার অনুরোধ করেও হাসপাতালের ভেতর ডুকতে পারেননি তিনি। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া শরীর আর কিডনির ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। মেয়ে শিউলিকে ধরে সকাল থেকে বসে ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের গেটের সামনে।
কিডনি রোগে আক্রান্ত এ বৃদ্ধা অপেক্ষার প্রহর গুণতে গুণতেই এক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। বৃদ্ধ মায়ের জ্ঞান হারানোর ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েন মেয়ে শিউলি। এ সময় শিউলি চিৎকার আর দিগবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। এমন মর্মান্তিক ঘটনার পরেও বৃদ্ধা খায়রুন্নেসার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগের দ্বার খুলে দেয়া হয়নি। পরে আশপাশের লোকজন এসে খায়রুন্নেসাকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়।
অসুস্থ মাকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে করতেই মেয়ে শিউলি বলছিল, ওরা এত পাষাণ! সকাল থেকে বসে আছি। গেটের কাছেই যেতে দিল না। রোগীদের জিম্মি করে এ কেমন আন্দোলন!
গত রোববার ঢামেক হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন নওশাদ নামে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ তোলেন রোগীর স্বজনরা।
এ নিয়ে চিকিৎসক ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে স্বজনদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট ও চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। ফলে বিপাকে পড়েন বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আসা সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনরা।