স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হিসাব শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে জমি অগ্রক্রয় মামলার ছয় বিচারপ্রার্থীর জমাকৃত ১৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫৭৫ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় দুই আইনজীবী ও আদালতের দুই কর্মচারীসহ চারজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। সোমবার বিকেলে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। গত রবিবার বিকেলে তাদের আটক করা হয়েছিল।
জানা গেছে, আদালতে কয়েকজন বিচারপ্রার্থীর জামি অগ্রক্রয় মামলার জমা টাকা জমা করেছিলেন। সুনামগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম (এপিপি), অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম এবং আদালতের হিসাবরক্ষক ঘেনু চন্দ্র রায় ও সাবেক কর্মচারী আব্দুস সোবহান সিন্ডিকেট করে আদালতের সেই টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। অ্যাডভোকেট মাজাহারুল ইসলাম, রেজাউল করিমসহ আদালতের ওই দুই কর্মচারী অগ্রক্রয় মামলায় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।
জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি অবগত হবার পর সুনামগঞ্জ সদর আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টাকা উত্তোলনকারী দুই আইনজীবীও হিসাবরক্ষক ঘেনু চন্দ্র রায়কে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য বুধবার আদেশ দেন। তাদের কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় রেববার জেলা জজের নির্দেশে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। ওই দিন ফেনি থেকে আদালতের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুস সোবহানকেও আটক করা হয়। সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালতের নায়েব নাজির শিফাত শাহরিয়ার সুনামগঞ্জ সদর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আদালত এলাকায় লাঞ্ছিত হয়েছেন শহীদনূর আহমদ ও জাহাঙ্গীর আলমসহ সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির দুই সাংবাদিক। সাংবাদিকরা আসামিদের জেলহাজতে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধারণ করতে গেলে কয়েকজন জুনিয়র আইনজীবী তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারা।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দুই আইনজীবীসহ আটক চার জানের বিরুদ্ধে আদালতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলা এফআইআরভুক্ত করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ শায়েখ আহমদ জানান, আদলতের হিসাব শাখার কর্মচারীদের সহযোগিতায় বিচারপ্রার্থীর জমি অগ্রক্রয় মামলার জমা অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাতে আদালত ও আইনজীবীদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গটা সুরক্ষিত থাকে। সাংবাদিকদের উপ হামলার ঘটনায় তিন ও আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনজীবি সমিতি সাংগঠনিকভাবে ব্যাবস্থা গ্রহন করবে।