দিরাই প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের সেচনী গ্রামের নিরিহ জেলে আব্দুল হান্নান ওরফে রাষ্ট্র মিয়া (৪৮) হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ, আসামীদের গ্রেফতার ও ভাসান পানিতে মাছধরার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন কর্মসুচি পালন এবং গনমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার এলাকাবাসীর উদ্যোগে স্থানীয় বাংলাবাজারে নিহতের স্বজনসহ আশ পাশের কয়েকটি গ্রামের সহ¯্রাধিক মানুষ এসব কর্মসুচি পালন করে।
দুপুর ১২টায় আবদুল জাহেদ মিয়ার সভাপতিত্বে এবং উপজেলা আওয়া মীলীগ সদস্য আমিন আলীর পরিচালনায় বাংলাবাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন, এলাকার মুরব্বি গিয়াস উদ্দিন মুক্তিযোদ্ধা নরুল ইসলাম, আবুল কালাম, ইয়াছিন মিয়া,মতিউর রহমান, সাইদুল ইসলাম, তফাজ্জুল,রিয়াজ উদ্দিন, ওয়াহিদনুর,সাইফুল ইসলাম সহ নিহতের স্ত্রী আবিদা খাতুন, ছেলে ইমান আলী ও আবুল হোসেন।
মানববন্ধন শেষে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রফিনগর ইউনিয়নের সেচনী গ্রাম। প্রায় দেড় হাজার লোকের বসবাস এ গ্রামে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষক ও জেলে। এলাকার দূর্বল ও অসহায় একটি গ্রাম। আমাদের পাশের গ্রাম খাগাউড়া। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশাল এ গ্রামটিতে প্রায় ছয় হাজার লোকের বসবাস। সম্পদ এবং রাজনৈতিকভাবে গ্রামটি অত্যন্ত প্রভাবশালী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট অভিরাম তালুকদার এই গ্রামের লোক হওয়াতে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব রয়েছে গ্রামটির। এবারের অকাল বন্যায় হাওর তলিয়ে যাওয়ায় আমাদের গ্রামের মানুষ একেবারেই অসহায় হয়ে পড়ে। গত ৩নভেম্বর দিবাগত রাতে আমাদের গ্রামের একেবারেই হতদরিদ্র পরিবারের কয়েকজ জেলে জীবিকার তাগিদে মাছ ধরার জন্য পার্শবর্তী জামারগঞ্জ উপজেলার ভছার হাওরে গেলে সেখানে গিয়ে খাগাউড়া গ্রামের প্রভাবশালী শৈলেন তালুকদার, নিখিল তালুকদার ও অভিরাম তালুকদারের নেতৃত্বে শতাধিক লোক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হাওরে মাছ ধরা অবস্থায় ঐ জেলেদের উপর হামলা চালিয়ে ছয়জনকে গুরুতর আহত করে আমাদের গ্রামের আব্দুল হান্নান ওরফে রাষ্ট্র মিয়া (৪৮)কে ধরে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ হাওরে ফেলে যায়। পরদিন ৪নভেম্বর হাওরে তার লাশ ভেসে উঠে।
জামালগঞ্জ থানা পুলিশ সে লাশ উদ্ধার করে। আহতদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে চার জনের অবস্থা এখনও আশ্কংাজনক। এমতাবস্থায় ৫ নভেম্বর নিহত আব্দুল হান্নান ওরফে রাষ্ট্র মিয়ার স্ত্রীর ভাই সেচনী গ্রামের মতিউর রহমান বাদী হয়ে খাগাউড়া গ্রামের শৈলেন তালুকদার, নিখিল তালুকদার ও অভিরাম তালুকদারসহ ৩১জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫জনকে আসামী করে জামালগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। বক্তারা দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান।