অনলাইন::
সৌদি যুবরাজের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে বেপরোয়া আখ্যা দিয়েছে যুক্তারাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতে মার্কিন স্বার্থ ক্ষুন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সে দেশের প্রতিরক্ষা দফতর ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। কদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের সূত্রে সৌদি নেতৃত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মার্কিন কূটনীতকরাও সৌদি আরবের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন।
সৌদি যুবরাজের নির্দেশেষ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে এরইমধ্যে ৫ শতাধিক ব্যক্তিকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। আটককৃতদের একাংশের ওপর ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতন হয়েছে বলেও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হেয়ছে। এদিকে সৌদি আরবে গিয়ে ইরান ও হিজবুল্লাহর ওপর দায় চাপিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। ইয়েমেনকেও ইরানবিরোধী ছায়াযুদ্ধের নাট্যমঞ্চ বানানোর চেষ্টা হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, সৌদি যুবরাজ ‘বেপরোয়া’ আচরণ করছেন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। তার এই আচরণে ফলাফল কি হবে সেটা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, পেন্টাগন ও গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মার্কিন কূটনীতিকদের মনোভাবও একই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মকর্তা নিউইয়র্ক টাইমসকে জানান: যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্ভাব্য পরিণতির ব্যাপারে যথেষ্ট বিবেচনাবোধের পরিচয় দিচ্ছেন না। তিনি বেপরোয়া আচরণ করছেন।
ক্রাউন প্রিন্স সালমানকে তার বাবা কিং সালমান গত জুনে ক্ষমতার পরবর্তী উত্তরসূরি ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ‘বেপরোয়া’ হয়ে উঠছেন ক্রাউন প্রিন্স। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-এর অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪ নভেম্বর শুরু হওয়া দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বাধীন কমিটি বেশ কয়েকজন প্রিন্সসহ ৫ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। একইদিন সৌদি আরবে অবস্থানরত অবস্থায় পদত্যাগের ঘোষণা দেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। পদত্যাগের জন্য দায়ী করেন ইরান ও হিজবুল্লাহকে। আটক অভিযান শুরুর পর দুজন সৌদি প্রিন্সের মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়। মিডল ইস্ট মনিটরের আরেক অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানে আটককৃতদের অন্তত ১৭ জনকে ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্প বলেছিলেন: সৌদি আরবের কিং সালমান ও ক্রাউন প্রিন্সের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে, তারা স্পষ্টভাবেই জানে তারা কী করছে। এদের কেউ কেউ তাদের দেশকে কয়েক বছর ধরে শোষণ করছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের অবস্থানে ভিন্নতা দেখা গেল। উল্লেখ্য, শুরু থেকেই বিদেশনীতির প্রশ্নে ব্যক্তি ট্রাম্প আর মার্কিন প্রশাসনের অবস্থানে তারতম্য দেখা গেছে।