বিশেষ প্রতিনিধি::
তারানা হালিম। বক্তৃতা যার কবিতা আবৃত্তির মতো। দীর্ঘক্ষণ শোনলেও বিরক্ত ধরেনা। অভিনয়গুণতো সর্বজন বিদিত। টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নানা উদ্যোগ নিয়ে সফল হয়েছেন। এবার তথ্যপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবার পরও ঝাঁপিয়ে পড়েছেন নিজের কাজে। মহাজোট সরকারের উন্নয়নের সড়কে তিনি এক সাহসী অভিযাত্রী। তবে আজ এক মানবিক ও দায়িত্বশীল কাজের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহানুভবতা ও মানবতার প্রোজ্জ্বল স্মারকে পরিণত হয়েছে। ২০০১ সনে এক সংখ্যালঘু কিশোরির পরিবার আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার অপরাধে জামায়াত-বিএনপির ক্যাডারদের গণধর্ষণের শিকার হন ওই কিশোরী। পূর্ণিমা শীল নামের তৃণমূল আওয়ামী লীগের নির্যাতিত ওই তরুণিকে আজ নিজের ব্যক্তিগত অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ছবিটি শেয়ার করার পর ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। সবাই প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। নানা অঙ্গনের মানুষ তার মহানুভবতার প্রশংসা করলেও এই ঘটনায় নির্যাতিত তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। তারাও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন দল তার ত্যাগের মূল্যায়ন করবে।
জানা গেছে ২০০১ সালে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে ১৫ বছর বয়সে গণ-ধর্ষণের শিকার হন পূর্ণিমা শীল। তার নির্যাতনের খবর তখন পত্রিকায় শিরোনাম হয়। পনেরো বছর বয়সের দশম শ্রেণীর ছাত্রী পূর্ণিমা গণধর্ষণের শিকার হয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। রাতে জোরপূর্বক বাড়িতে ডুকে তার উপর হামলে পড়ে জামায়াত বিএনপির ক্যাডাররা। এই ঘটনাটি প্রথমে সামনে আনেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা। এই বিষয়টি তখন জাতীয়ভাবে আলোড়ণ তুললেও সময়ের ব্যবধানে বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও তাকে ভুলতে বসেন। তবে দীর্ঘদিন পরও মেয়েটিকে ভুলতে পারেননি তারানা হালিম।
তারানা হালিম সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে আজ লিখেন, ‘মনে পড়ে সেই পূর্ণিমাকে? ২০০১ এর ১ অক্টোবর নির্বাচন-পরবর্তী বিএনপি-জামাতের পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিল ১৪ বছরের মেয়েটি।
হ্যাঁ, আমি সিরাজগঞ্জের সেই পূর্ণিমা শীলের কথা বলছি। আজ আমি গর্বিত আমি পূর্ণিমাকে আমার ‘পার্সোনাল অফিসার’ হিসাবে নিয়োগ দিলাম। পূর্ণিমা, তোমাকে আমরা ভুলে যাইনি। জীবনের অন্ধকার রূপ তুমি দেখেছো, আলোর জগতে তোমায় স্বাগতম… শুরু হোক নতুন পথচলা। তোমাকে অভিবাদন প্রিয় পূর্ণিমা।’
আওয়ামী লীগের সজ্জন এই রাজনীতিকের কাছ থেকে তৃণমূলের নির্যাতিত বিষ্মৃতপ্রায় পরিবারের এই নারীর মূল্যায়নের খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এতে তৃণমূলের নির্যাতিত নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত হন। তারা একজন রাজনীতিকের এমন মহানুভবতার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি তৃণমূলের নির্যাতিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের আহ্বান জানান।