অনলাইন::
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন, সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশ বলে প্রণীত ৩৬ বছরের পুরানো নীতিমালার আওতায় চলছে দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। দ্য মেডিকেল প্রাকটিস এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস এন্ড ল্যাবোরেটরিস রেজুলেশন (অধ্যাদেশ) নামের এ নীতিমালাটি রহিত করে নতুন আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরে তিনি এ তথ্য জানান।
ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্থাপন করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তুম আলী ফরাজী। মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন রাখতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, আজকাল দেশের আনাচে-কানাচে অনেক ক্লিনিক গড়ে উঠেছে, যেগুলোর স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা ও সেবার মান অতন্ত্য নিম্ন। কোন নীতিমালার ভিত্তিতে এসব ক্লিনিক অনুমোদিত হয়েছে?
জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, ওই নীতিমালা অনুযায়ী গঠিত কমিটির মাধ্যমেই স্বাস্থ্যসেবার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘লাইসেন্স’ (নিবন্ধন) দেওয়া হয়।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা গতিশীল করতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের গাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ক্রয় কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।’
স্বতন্ত্র সদস্য রহিম উল্লাহর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডাক্তার, নার্সসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে ৪১৪ উপজেলায় ডিজিটাল হাজিরা চালু করা হয়েছে।
সরকার দলীয় সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে চিকিৎসার জন্য কিছু রোগী বিদেশে চলে যায় কথাটি সত্য। এ প্রবণতা রোধকল্পে আমাদের দেশে উপজেলা হাসপাতাল থেকে শুরু করে জেলা ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের হাসপাতালগুলোকে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া সকল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ওই হাসপাতালগুলোয় আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
সরকার দলীয় সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নাসিম জানান, উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী ২৮টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পেনিসিলিন ও সেফালোস্পরিন জাতীয় এ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড, এ্যান্টিক্যান্সার এবং হরমন জাতীয় ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে।
সরকারী দলের আরেক সদস্য দিদারুল আলম প্রশ্ন রাখতে গিয়ে অভিযোগ করেন, দেশে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা কিন্ডার গার্টেনের মতো বেড়ে গেছে। অধিকাংশ বেসরকারি কলেজেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ ও যন্ত্রপাতি সংকট রয়েছে।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু কিছু মেডিক্যাল কলেজ মান অর্জনে এখনো পুরোপুরি সক্ষমতা অর্জন করতে না পারায় মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিমের মাধ্যমে ব্যর্থ কলেজগুলোর ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কলেজগুলো মানোন্নয়নের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।