সাইফ উল্লাহ::
হাওর বাওর নদী নালা নিয়েই জামালগঞ্জ উপজেলা। এখন শুকনো মৌসুম। হাওর নদীর পানি কম। চৈত্রের অবসর দিন। মানুষের কোন কাজ নেই। দল বেঁধে লোকজন পলো বাইচের জন্য বেরিয়ে পড়ছে। কোন উম্মক্ত জলাশয় কিংবা হাওর নদীতে। এমনই এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা গেল জামালগঞ্জের দৌলতা নদীতে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পলো নিয়ে মাছ ধরতে নেমেছিলেন নানা বয়সের মানুষের দল। মাছ পাওয়ার চেয়ে তাদের মধ্যে আনন্দটাই লক্ষ্য করা গেছে বেশি।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনব্যাপী উপজেলার দৌলতা নদী’তে পলো দিয়ে মাছ ধরেন সৌখিন মাছ শিকারীগণ। উপজেলার বিভিন এলাকা থেকে শিশু কিশোরসহ কয়েক শতাধিক মাছ শিকারি ও সৌখিন মানুষেরা পলো বাইচে অংশ নেন। তাদের একজন সোনা মিয়া পলো বাইচ ভাল জানেন। মাছও ধরেছেন ভাল। ২টি বোয়াল ও ১টি গজার মাছ ধরেছেন। তিনি যে কোন জায়গায় পলো বাইচ হলে অংশ নেন বলে জানান। আরেকজন তাজ উদ্দিন শখের বসে এসেছেন। সাথে আরও দুইজন। বাড়ীর পাশ্ববর্তী হওয়ায় মাছ ধরতে আসা। জিয়াউর রহমান দক্ষ পলো বাইচাল। মাছ পেয়েছেন ভাল। তিনি বলেন, দৌলতা নদীর মালিক পক্ষ মাছ ধরার সুুযোগ দেওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। আব্দুর রহমান বলেন, উম্মুক্ত জলাশয় না থাকায় আমরা মাছ ধরতে পারিনি। অনেক হাওর, নদী ইজারা হয়ে যাওয়ায় মালিক পক্ষ বাধা-নিষেধ করেন। তিনি পলো বাইচের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে উম্মুক্ত জলাশয়ের দাবি জানান। পলো ছাড়াও অনেকেই টানাজাল, পেলুনজাল, উরাল জাল, নেট জাল দিয়ে মাছ ধরেছেন। মাছের মধ্যে বোয়াল, গজার, আইড়, রুই, কড়া, ঘনিয়া, শোউল মাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ছোট মাছ ধরেছেন। আবার অনেকেই দিন শেষে খালি হাতে ফিরতেও দেখা গেছে। গ্রাম বাংলার আবহমান কাল থেকে পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব চলে আসলেও জামালগঞ্জ উপজেলায় পলো বাইচ এখন আর তেমন দেখা যায়নি। পর্যাপ্ত উম্মুক্ত জলাশয় না থাকায় মাছ শিকারিগণ পলো দিয়ে আগের মত মাছ ধরতে পারেন না। অনেক সময় ইজারাদারদের খপ্পরে পড়ে হয়রানির শিকার হতে হয়।