স্টাফ রিপোর্টার::
মঙ্গলবার সকাল ১০টা। আকাশের রগচটা সূর্যটা প্রখর রৌদ্র বাণ ছুড়ছিল। এই প্রখর রোদ্দুরেই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বিভিন্ন বাধ পরিদর্শন বের হন সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. বরকত উল্লাহ খাঁন। যেসব বাঁধে তিনি অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছেন তা নিয়ে বাঁধ মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলামকে অবগত করবেন বলে কৃষকদের আশ্বস্থ করেছেন। উল্লেখ্য নতুন কাবিটা নীতিমালায় জেলা পুলিশ সুপারকেও মনিটরিং কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে। সেই দায়বোধ থেকেই তিনি জরুরি রুটিন কাজ ফেলে হাওরের বাঁধ পরিদর্শনে যান। বাঁধে বাঁধে ঘুরে তিনি হাওরের ফসলহারা কৃষককে সংহতি জানিয়ে এবারের ফসল রক্ষার কাজে পুলিশ তাদের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় যান পুলিশ সুপার মো. বরকত উল্লাহ খান। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুই উপজেলার ছয়টি হাওর রক্ষা বাঁধ পরির্দশন করেন। পুলিশ সুপার প্রথমে বিশ্বম্ভরপুর উজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের হালির হাওর উপ-প্রকল্পের ২৪ নং পিআইসির কালাচাঁন পুর হইতে ফতেহপুর সিএমবি সড়ক পর্যন্ত নব নির্মিত বাঁধে ছুটে যান। একই প্রকল্পের কুফা নদীর গোঁজা খালীর ২৩ নং পিআইসির কাজও পরিদর্শন করেন। এই বাঁধে তিনি স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অভিযোগ পান। কৃষকরা তাকে জানান, এই বাঁধে ৫০ কেজির মাটির বস্তা দুই দিকে দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০ কেজির স্থলে ২০ কেজি মাটি দেয়া হচ্ছে। এটা প্রত্যক্ষ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পুলিশ সুপার ও হাওরের বাঁধ মনিটরিং কমিটির সদস্য মো. বরকত উল্লাহ খান। এই বাধ পরিদর্শনের সময় পুলিশ সুপার সংশ্লিষ্টদের দ্রুত অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ সুপার ফতেহপুর ইউনিয়নের কালা নদীর পাশের হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন।
বিশ্বম্ভরপুরের ফসলরক্ষা বাঁধ পরিদর্শন শেষে তিনি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওর, কাচিভাঙ্গা হাওর ও খাই হাওরের হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন। বাধ ঘুরে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে তার বাধ পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ যথা সময়ে শেষ না হওয়ায় ফসলহানীর ঘটনা ঘটেছিল এবার সেই সকল বাঁধ ও ক্লোজারগুলো আগের সময়ের চেয়ে ঠেকসই ও মজবুত করে তৈরি করা হয়েছে। তারপরও বাঁধ পরিদর্শনে এসে আমরা যেসব অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছি সে বিষয়ে জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট জানিয়ে দিব এবং বাঁধগুলির কাজ যাতে সম্পন্ন হয় সেই চেষ্টা করব। তিনি বলেন, আশা করি এবার সুনামগঞ্জের ফসলহারা কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে। হাওর ঘুরে কৃষকের মুখে সেই খুশির ঝিলিক লক্ষ্য করেছি। এবার বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পুলিশ সুপার মো. বরকত উল্লাহ খান।
পুলিশ সুপার মো. বরকত উল্লার সঙ্গে হাওরের বাঁধ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মাহবুব রহমান, ডি আই ওয়ান আনোয়ার হোসেন মৃধা, বিশ্বম্ভপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মনির হোসেন, ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রনজিৎ চোধুরী রাজন, ডিবির উপ-পরিদর্শক সৈয়দ বশির আহমদ প্রমুখ।