অনলাইন::
প্রশ্নফাঁস ছাড়াই সফলভাবে শেষ হতে চলেছে চলমান এইচএসসি পরীক্ষা। কিন্তু রেজাল্ট পরিবর্তনের নামে নতুন একটি ফাঁদ পেতেছে প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যরা।
ডেইলি বাংলাদেশের অনুসন্ধানে ভূয়া ফলাফল পরিবর্তনের সদস্যদের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে স্কিনশট সংগ্রহের মাধ্যমে জানা যায়, তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফলাফল পরিবর্তণের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করছে। চক্রের সদস্যদের গোপনীয়তা রক্ষার্থে শিক্ষার্থীদের শুধু ইনবক্সে যোগাযোগের জন্য বলছে, এবং কোন লাইক বা কমেন্ট করতে নিষেধও করছে। এছাড়াও ‘আগে কাজ পরে টাকা’ এমন প্রস্তাব দিয়েও কেউ কেউ ফেসবুক পেজে পোস্টও দিচ্ছে।
প্রশ্নফাঁস রোধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যদের আটকও করা হয়েছে।
এসএসসি এবং চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কবস্থানের জন্য ব্যর্থ হয়েছে এ চক্রের সদস্যরা। সারাদেশে অভিযান চালিয়ে প্রায় দু’শ এর বেশী প্রশ্নফাঁস চক্রের সেঙ্গে জড়িত সদস্যদের আটক করা হয়েছে।
গত ২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠায় ছিল অভিভাবকেরা। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কঠোর নজরদারির সমালোচনা করলেও প্রশ্নফাঁসের কোনো খবর না পাওয়ায় তারা খুশি। অভিভাবকরা বলছেন, প্রশ্নফাঁসের ঘটনা আমাদের বিচলিত করে তোলে, টেনশনে থাকি। তবে এখন পর্যন্ত প্রশ্নফাঁসের কথা শুনিনি। প্রশ্নফাঁস না হলেই আমরা খুশি।
এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সাধুবাদ জানিয়ে প্রশ্নফাঁস না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদরা। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুয়েটের কম্পিউটার কৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি বহুদিন পর প্রশ্নফাঁসমুক্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রশ্নফাঁস হয়নি এতে খুবই আনন্দিত আমি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক সজাগ হয়েছে। প্রশ্নফাঁস যেন না হয়, সেজন্য তাদের অবস্থান আসলেই চোখে পড়ার মতো, আমরা মুগ্ধ হয়েছি।
প্রশ্নফাঁস রোধে এবং প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের ধরতে উদ্যোগ নেয় র্যাব। র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বলেছেন, যারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত তারা জাতির শত্রু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে প্রশ্নফাঁস রোধে কাজ শুরু করেছে র্যাব। এ ধরনের কোনো কিছুর খোঁজ পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য তিনি আহ্বান জানান।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতায় প্রশ্নফাঁসে ব্যর্থ হয়ে এবার ফলাফল পরিবর্তনে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করছে প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত সদস্যরা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে ফলাফল পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার্থীদের অফার দিয়ে যাচ্ছে প্রশ্নফাঁচক্রের সদস্যরা।
তবে ভূয়া প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যদের মতো ভূয়া ফলাফল পরির্তন চক্রের সঙ্গেও যারা জড়িত রয়েছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায়ে এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলে জানান আইন শৃঙ্গলা বাহিনীর সদস্যরা।