স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের টেকেরঘাট সাব সেক্টরের অসম সাহসী কিশোর মুুক্তিযোদ্ধা ও এই সাব সেক্টরের প্রথম শহিদ আরশ আলী ১৯৭১ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানী হানাদার ও রাজাকার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে শহিদ হন দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বাবনিয়া গ্রামে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তুমুল যুদ্ধ হয়। হানাদার ও রাজাকারদের সংঘবদ্ধ ও অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কয়েকজনকে নিয়ে একাই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার আস্তমা গ্রামের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা আরশ আলী। একটানা যুদ্ধ করে শহিদ হন তিনি। কোন মতে তার লাশ সঙ্গে নিয়ে যান সহযোদ্ধারা। দিরাই উপজেলার কালিগোটা হাওরের জাঙ্গালে দাফন করেন তারা। কয়েক বছর আগে টেকেরঘাট সাব সেক্টরের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী সদ্যপ্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ও কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি সালেহ চৌধুরী স্থানীয়দের সহায়তায় সহযোদ্ধার কবরটি খুঁজে পান। এসময় তিনি ঘোষণা দেন তার ভাতার টাকায় সহযোদ্ধা আরশ আলীসহ অন্যান্য সহযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিচিহ্ন নির্মাণ করবেন। শুরু হয় তার কার্যক্রম। তিনি শহিদ আরশ আলী স্মৃতিসৌধের দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন করে গেলেও কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। গত বছর মারা যান। হাওরের কান্দায় করচগাছের মধ্যখানে সবুজ ঘাসঘেরা স্থানে কালোরঙা স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়েছে সালেহ চৌধুরীর অর্থায়ন, পরিকল্পনা ও ডিজাইনে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে শহিদ আরশ আলী দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধটির ফলক উন্মোচন হয়। স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন শহিদ আরশ আলীর ভাই আব্দুল হাশিম। এ উপলক্ষে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা, জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ খসরু, মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সালেহ চৌধুরীর পুত্র ইয়াছির আজমান চৌধুরী, ইয়ামিন চৌধুরী প্রমুখ।