1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন

বজ্রপাতের কারণে হাওরে ধান কাটতে অনাগ্রহী শ্রমিকরা

  • আপডেট টাইম :: বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮, ১১.২৫ এএম
  • ৩৫১ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার::
গত কয়েকদিন ধরে টানা বজ্রপাতে ধান কাটা অবস্থায় হাওরে মারা যাচ্ছেন কৃষক ও ধানকাটা শ্রমিকরা। শ্রমিকের অভাবে পরিবারের সন্তানদের ধান কাটতে এনে বজ্রাঘাতের মুখে পড়ছেন কৃষক। ধান কাটতে শ্রমিকরাও হাওরে এসে হতাহত হচ্ছেন। গত দুই দশক ধরে চলা শ্রমিক সংকটের মধ্যে আকষ্মিক বজ্রপাত এখন সংকটকে আরো তীব্র করেছে। কৃষক ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের মতে এখনো হাওরে অর্ধেকের মতো পাকা ধান অকর্তিত আছে। গত তিন দিন ধরে বজ্রপাতের কারণে ধান কাটছেন না শ্রমিকরা।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগের মতে সুনামগঞ্জের হাওরে এ পর্যন্ত ৭৮ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। হাওর বাদে অন্যান্য স্থানে ধান কাটা হয়েছে তাদের মতে ৬৫ ভাগ। তবে কৃষক ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন এখনো হাওরে অর্ধেকের মতো পাকা ধান রয়ে গেছে। বজ্রপাতের কারণে কারণে সেই ধান কাটা সম্ভব হচ্ছেনা। গত তিনদিনে সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৬ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন। এ ঘটনায় হাওরের কৃষক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় কৃষকরা হাওরে বিশেষ টাওয়ার বসিয়ে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র বসানোর দাবি জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে গত ৩০ এপ্রিল সুনামগঞ্জে সকাল ১১ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নিয়মিত বৃষ্টি ঝড় ও বজ্রপাত হচ্ছে। হঠাৎ আকাশ কালো করে ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি নামছে। সঙ্গে ক্রমান্বয়ে বজ্রপাত। সকালে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখে কৃষক ও শ্রমিকরা গ্রামে ফিরতে পারেননা। বিস্তৃত হাওরে গ্রামগুলো অনেক দূরে থাকায় দ্রুত তাদের পক্ষে নিরাপদে এসে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ থাকেনা। ফলে বজ্রাঘাতের মুখে পড়েছেন। গত মঙ্গলবার জামালগঞ্জের পাগনার হাওরে শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে নেমেছিলেন কৃষক কমলাকান্ত তালুকদার। তিনি বজ্রাঘাতে মারা যান। আহত হন তার দুই ছেলে ও এক প্রতিবেশি। গতকাল বুধবার সকালে একই এলাকায় বেলা ১১টায় বজ্রাঘাতে নিজ জমিতে আহত হন কৃষক সেতু সরকার। গত ১ মে বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ সদর এবং জামালগঞ্জে আরো তিন শ্রমিক মারা যান। ধান কাটা অবস্থায়ই হাওরে তাদের মৃত্যু হয়। এসব ঘটনায় কৃষক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে শ্রমিকরা বজ্রপাতের ভয়ে ক্ষেতে নামতে চাচ্ছেন না। এদিকে যে ধান কেটে খলায় তুলেছিলেন দিন খারাপ থাকায় তাও শুকানো যাচ্ছেনা।
জামালগঞ্জ মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফুর রহমান বলেন, হাওরের আয়তন বিশাল। তাই দিন খারাপ করলে দ্রুত লোকালয়ে এসে পৌঁছতে পারেনা কৃষক। সরকার যদি প্রতিটি হাওরে বিশেষ টাওয়ারের মাধ্যমে বজ্রনিরোধক যন্ত্র বসাতো তাহলে কৃষকরা উপকৃত হতো। তিনি বলেন, শ্রমিক সংকটের মধ্যে বজ্রপাত আরো সংকটকে ঘনিভূত করেছে। অর্ধেকের বেশি পাকা ধান কাটতে না পেরে দুশ্চিন্তায় আছে কৃষক।
জামালগঞ্জ উপজেলার ছয়হারা গ্রামের কৃষক সাধু তালুকদার বলেন, গত দুইদিনে আমাদের এলাকায় বজ্রপাতে দুইজন মারা গেছে এবং আহত হয়েছে কয়েকজন। প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলেও ১১ টা থেকে ১টা পর্যন্ত টানা বজ্রপাত বৃষ্টি ও ঝড় হচ্ছে। ধান কাটতে গিয়ে শ্রমিকরা মারা যাওয়ায় অন্যান্য শ্রমিকরা ধান কাটতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তিনি বলেন, আমাদের অর্ধেকের বেশি ক্ষেতের ধান পাকা অবস্থায় হাওরে অরক্ষিত আছে। যে কোন সময় বন্যা ও শিলা বৃষ্টিয় ক্ষতি হতে পারে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার সাহা বলেন, হাওর এলাকায় এখন পর্যন্ত ৭৮ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। হাওর বাদে অন্যান্য এলাকায় যে বোরো চাষ হয় তার মধ্যে ৬৫ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। বজ্রপাতের ভয়ে অনেক এলাকায় হাওরের পাকা ধান কেটে তোলা সম্ভ হচ্ছেনা।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!