শাল্লা প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় ৫ শতাধিক শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় একশ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ঝড়ে ৭টি গবাদি পশু মারা গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় কালবৈশাখি ঝড়ের তা-বে এই ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর এখনো স্বাভাবিক হয়নি শাল্লা উপজেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে হঠাৎ প্রবলবেগে ঝড়, তুফান ও শিল্লাবৃষ্টি শুরু হয়। কালবৈশাখি ঝড়ে উপজেলার ডুমরা, ঘুঙ্গিয়ারগাঁও, উপজেলা সদরের কলেজ রোড, সুখলাইন, আঙ্গারুয়া, বাহাড়া নতুন হাটি, বাজারহাটি, রঘুনাথপুর, যাত্রাপুর, কলাকান্দি, খল্লি, রৌয়া রূপা, মৌরাপুর, কান্দিগাঁও, মামুদনগর, মনুয়া ও মুক্তাপুরসহ বেশকটি গ্রাম কালবৈশাখি ঝড়েড় তা-বে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এসব গ্রামের অন্তত ৫ শ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়ে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি। এছাড়াও শাল্লা ডিগ্রি কলেজ, শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, গোবিন্দ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং শাল্লা উপজেলা হাসপাতালের উপর বড় বড় গাছ ভেঙ্গে ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে অন্তত ৬ টি বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে গেছে। বিভিন্ন স্থানে তার ছিড়ে মাটিতে পড়ে যাওয়ায় সকাল থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। ঝড়ে উপজেলার বাহাড়া ইউপির সুলতানপুর গ্রামের মতিন মিয়া (১৮), ইউনূস মিয়া (২৫), বাহাড়া গ্রামের একই পরিবারের রুহিনী দাসের স্ত্রী শিল্পী রাণী দাস (২৬), তার শিশুপুত্র রুদ্র দাস (৮), ইমন দাস (৫), শাল্লা ইউপির জহিরুল মিয়া (৬০) ও ইয়ারাবাদ গ্রামের সায়েদ মিয়া (৬৫)সহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় সায়েদ মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কালবৈশাখি ঝড়ে শাল্লা সদর সংলগ্ন ব্রিজর পর্যন্ত বিদ্যুতের ৬টি খুঁটি ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে গেছে। বাহাড়া নতুন হাটিতে ব্র্যাকের শিক্ষা তরীটি উল্টে ভেঙ্গে গেছে। সুখলাইন গ্রামেই অন্তত ৫০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। তাছাড়া ঝড়ে খলায় থাকা ধানও উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ওই গ্রামের প্রণয় চন্দ্র দাসের ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ঘরে জড়ো করে রাখা প্রায় ৭০ মন ধানও ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এদিকে ঝড়ের খবর পেয়ে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আলম শুক্রবার দুপুর থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কালবৈশাখি ঝড়ে ফয়জুল্লাহপুরে ২টি, প্রতাপপুরে ২টি, মুক্তারপুরে ২টি এবং শশারকান্দায় একটি গরু মারা যায়।
শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায়। প্রকৃতির এমন ভয়ঙ্কর তান্ডব আর দেখেননি। ক্ষতিগ্রস্থদের জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তিনি।
পরিদর্শনে গিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। আমি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলেছি। শিগ্রই তারা সহায়তা পাবে।