হ্যাঁ, এই মৃত্যু উপত্যকাই আমার দেশ। এটাই আমার নিয়তি, আমাদের নিয়তি। নিয়তি সত্য। নইলে পৃথিবীর এত এত দেশ থাকতে এই রক্তপাতের দেশে জন্মালাম কেন? কপালের ফের, সব কপালের ফের। ভেবেছিলাম অমাবস্যা কেটে গেছে। এবার পৌর্ণমাসীর পালা। কিন্তু ভুল। অমাবস্যা এখনো কাটেনি। রক্তপাত এখনো চলমান। কার উপর দায় চাপাবো? রাষ্ট্রের উপর? রাষ্ট্র তো মানুষ বোঝে না। বোঝে হিন্দু-মুসলমান, বোঝে আস্তিক-নাস্তিক। তার গায়েও বিশেষ ধর্মের সিল। বিচার চাওয়ার মতো জায়গা কোথায়?
তবু আশায় থাকি, একদিন অমাবস্যা কাটবে। জ্যোৎস্নার বন্যায় মুছে যাবে রক্তের দাগ। সেদিন হয়ত আসবে। সেদিন শাস্ত্রপ্রোক্ত স্বর্গকে এই বাংলার মাটিতে নামিয়ে আনবে বাঙাল মানুষ। সেদিন হিন্দু-মুসলমান থাকবে না, বৌদ্ধ-খৃষ্টান থাকবে না, আস্তিক-নাস্তিক থাকবে না, কোথাও কোনো রক্তপাত থাকবে না। থাকবে শুধু মানুষ। সর্বমানবের সম্মিলিত সংগীত-উৎসবে মুখর হবে এই বঙ্গভূমি। কিন্তু আফসোস, সেদিন আমি থাকব না, আমরা থাকব না। এখন আছি। রক্তপাতের এই বর্তমানকে মেনে নিয়ে বেঁচে আছি। আমার কিচ্ছু করার নাই। আমাদের কিচ্ছু করার নাই। তবু ভগ্নহৃদয়ে এই কথা লিখে রাখি, ‘হত্যাকারীর বিচার চাই।’
(লেখকের ফেইসবুক টাইম লাইন থেকে নেওয়া)