আরিফ বাদশাঃ
আজ মনসা পূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় গ্রাম গুলোর সনাতন ধর্মের লেউৎসব। হাওরাঞ্চলের গ্রপ্রতিবছর বাংলা শ্রাবণ মাসের শেষ তারিখে এই পূজৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দেবী মনসাকে অর্ঘ্য দিতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
সনাতন ধর্মাবলম্বিরা জানান, এই পূজার মূল প্রতিপাদ্য হল মা মনসার উদ্দেশ্যে পাঁঠা (মর্দ ছাগল) বলির মাধ্যমে মানুষের মনের পশুকে দমন করা। হিন্দু ধর্মমতে মনসা হচ্ছে সাপের দেবী। এ দেবীর পূজা করলে ঘর-বাড়ি বিষাক্ত সাপ হতে রক্ষা পায়। দেবীর সারা গায়ে অলংকার হিসেবে বিভিন্ন সাপ জড়ানো থাকে। এছাড়া মানুষের মনের পশু দমনে এ দেবীর উদ্দেশ্যে পাঁঠা বলি করা হয়। দেবী মনসার বিভিন্ন কীর্তি মনসা পুঁথিতে বর্ণিত রয়েছে। মনসা পূজার আগে প্রায় একমাস ধরে এ পুঁথি পাঠ করেন হিন্দু নারীরা। অনেক স্থানে পালাও পরিবেশিত হয়।
সাধারণত ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল করে গানের সুর করে পুঁথি পাঠ করা হয়। গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানেও বিশেষভাবে পুঁথি পাঠের আয়োজন করা হয়। মনসা পূজার আগে অবশ্যই এ পুঁথি পাঠ শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী মনসা পূজায় পাঁঠা বলি করেন না। তারা দুধ-কলা ও ফলমূল দিয়ে দেবীর পূজা করেন। এই পূজাকে ‘সাদা পূজা’ বলা হয়। যারা মায়ের উদ্দেশ্যে পাঁঠা বলি দেন তাদের পূজাকে বলা হয় ‘লাল পূজা’। দেবীর উদ্দেশ্যে যে পাঁঠাগুলো বলি করা হয় বলির পর সেগুলোর সবগুলোর দেহ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে একটি পাত্রে রাখা হয় এবং দেবী মনসার পায়ের নিচে রাখা হয়। এতে করে বলি করা পশুটি দেবীর নামে উৎসর্গ করা হয়।
প্রতি বছরের মত এবারও দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো সুনামগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামের পাঁঠা বলির মাধ্যমে মনসা পূজা উদযাপন করা হবে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সকালে দেবীর সাদা পূজা সম্পন্ন করা হবে এবং পরে ভক্তদের মাঝে প্রদান করা হবে অঞ্জলি। এরপর শুরু হবে পাঁঠা বলি।