স্টাফ রিপোর্টার, তাহিরপুর::
সুনামগঞ্জের তাহিরাপুর উপজেলার বালিজুরী এলাহী বক্স উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রভাবশালি ব্যক্তিরা উচ্চ আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উচ্চ আদালত পূর্বের প্রধান শিক্ষককে স্বপদে বহালের নির্দেশনা দিলেও আদালতের আদেশ না মেনে সংশ্লিষ্টরা স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক নিয়োগের তৎপরতা শুরু করেছে।
জানা গেছে নানা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জের ধরে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমানকে নীতিমালা বহির্ভূতভাবে চাকুরিচ্যুত করেন সভাপতি। বিভিন্ন হস্থক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান উচ্চ আদালতে ১৫৪৩৩ নং রীট দায়ের করেন। রীটে ৯০ দিনের স্বপদে বহাল রাখার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের এই রায় বাস্তবায়নের জন্য সিলেট শিক্ষা বোর্ডের মোস্তফা কামাল আহমেদ প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমানকে স্বপদে বহালের জন্য লিখিত দেন পরিচালনা কমিটিকে। কিন্তু কমিটির সভাপতি উচ্চ আদালত ও শিক্ষা বোর্ডের আবেদনকে অগ্রাহ্য করে। প্রধান শিক্ষক আদালতের রায় নিয়ে বারবার যোগদান করতে গেলেও তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ আছে।
এদিকে উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করায় চলতি বছরের ২ এপ্রিল স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সুপারিশ নিয়ে প্রধান শিক্ষক আবারও শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করেন দায়িত্ব ফিরে পেতে। অন্যদিকে বোর্ডের আবেদন উচ্চ আদালতের প্রথম নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান ৭৭৫৫/২০১৮ আরেকটি রীট পিটিশন করেন। ওই রীটের আদেশে উচ্চ আদালত ৩০ দিনের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে স্বপদে বহালের নির্দেশনা প্রদান করেন। আদালতের দ্বিতীয় রায় সিলেট শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবরে দাখিল করে দায়িত্ব ফিরে পেতে আবেদন করেন প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান। কিন্তু তারপরও তাকে যোগদান না করিয়ে
এই বিষয়ে বালিজুরী এলাহীবক্স উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির কারণে প্রধান শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করেছে আগের কমিটি। আমরা আদালতের কোন নির্দেশনা পাইনি।
প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি আইনের প্রতি সম্মান রেখে বার বার স্কুল কমিটিকে কাগজ দিয়ে বলেছি তারা আমাকে বার বার ফিরিয়ে দিয়েছে। তারপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা র্বোড সিলেট চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছি। এরপরও কোন সমাধান হচ্ছে না আমি এখন অসহায় হয়ে পরেছি। আমি একজন শিক্ষক হয়ে আমার ন্যায় বিচার পাবার জন্য বার বার অবহেলিত হচ্ছি। মাহামান্য হাইকোর্টের রায় অমান্য করছে তার পরও কোন বিচার পাচ্ছি না।
এই বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছুই বলেনি। ম্যানিজিং কমিটিই যা করার করেছে। সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা র্বোড সিলেট থেকে ও হাইকোর্টের কোন নির্দেশনা পাননি বলে জানান তিনি।