সাজ্জাদ হোসেন শাহ্:
ভারতে পালিয়ে যাবার পথে তাহিরপুরের সেই পল্লী চিকিৎসক লাল মোহন বর্মণ (৪৫) কে তাহিরপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।’ সে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামের মদন মোহন বর্মণের ছেলে।
মঙ্গলবার ভোররাতে তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত এলাকার জিরো লাইন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোররাতে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নন্দন কান্তি ধরের নেতৃত্বে, এসআই মুহিত মিয়া ও সঙ্গীয় ফোর্সের সহযোগীতায় উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। এসময় তার অপর সহযোগী উপজেলার বালিজুরী গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে পল্লী চিকিসক নুরুল আমিন পুলিশী ধাওয়ার মুখে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী অফিসার তাহিরপুর থানার এসআই মো. মুহিত মিয়া।
প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট বুধবার উপজেলার বড়খলা গ্রামের সুজিত বর্মণের স্ত্রী শৌমরী বর্মণের প্রসব ব্যথা উঠলে বড়খলা গ্রামের চিকিৎসক লালমোহন বর্মণ ও পার্শ্ববর্তী বালিজুরী গ্রামের চিকিৎসক নুরুল আমিনকে ডাকা হয়। তারা প্রসূতিকে দেখে গর্ভের নবজাতককে মৃত বলে গর্ভপাতের পরামর্শ দেন। কিন্তু গ্রামের ধাত্রী রাজু বেগম ও প্রসূতি নিজেই বাধা দিয়ে জানান সন্তান জীবিত আছে, পেঠের ভেতর নড়াচড়াও করছে।
একপর্যায়ে দুই পল্লী চিকিৎসক ব্লেড দিয়ে জরায়ুর মুখ কেটে নবজাতককে বের করে আনলে বাচ্চাটির মাথার বেশ কিছু অংশ কেটে যায়। তড়িঘড়ি করে চিকিৎসকরা নবজাতকের মাথায় ৫টি সেলাই ও শৌমরী বর্মণের অধিক রক্তক্ষরণ হলে তার জরায়ুর মুখে ১৭টি সেলাই দেয়।
এদিকে পরিবারের লোকজন নবজাতকের নড়াচড়া দেখে তাৎক্ষণিক প্রসূতি মা ও নবজাতককে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথেই নবজাতকের মৃত্যু হয়। আর প্রসূতি মাকে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণে শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনো তিনি আশঙ্কামুক্ত নন বলে জানা গেছে।
এঘটনায় শৌমরী বর্মণের স্বামী সুজিত বর্মণ বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসায় অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু এবং প্রসুতিকে ভুল চিকিৎসার মাধমে গুরুতর আহত করার অভিযোগ এনে পল্লী চিকিসক লাল মোহন বর্মণ ও নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।