নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট ::
সিলেট নগরীর দর্শন দেউড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি এম. রশীদ আহমদ হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। প্রায় ২৩ দিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে গত সপ্তাহে বাসায় ফিরেন তিনি। এখনো তিনি পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন এবং হামলকারীদের আতঙ্কে আছেন বলে জানা গেছে।
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেও দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা না নিলে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হতে পারে তাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রশীদের পুরোপুরি সুস্থ হতে দীর্ঘদিন সময় লাগবে। আর পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হলে তাকে দেশের বাইরে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে হবে।
এদিকে গতকাল এই হামলার ঘটনার একমাস পূর্ণ হলেও এখনো এর কোন তথ্যই সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিশ। হামলার দু’দিন পর তার ছোট ভাই বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করলেও ধরা পরেনি কোন আসামী, তাই অগ্রগতি নেই মামলায়ও।
মামলার বর্তমান অবস্থার ব্যপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার ওসি গৌসুল হোসেন সিলেটভিউকে বলেন- এখনো ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে।
আর ঘটনার পরদিন সিলেটের আওয়ামী পরিবারের পক্ষ থেকে এই হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এই বিক্ষোভ মিছিল থেকে হামলাকারীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হলেও পরবর্তীতে আর কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি। এছাড়া ঘটনার পর ৩০ আগস্ট সিলেটে আওয়ামী লীগের শোকসভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যে রশীদের উপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবী উঠলেও একমাসেও নেই কোন অগ্রগতি।
এদিকে, রশীদের উপর হামলার পর সিলেটে কানাঘুষা হচ্ছিল বিগত সিটি নির্বাচনের দ্বন্দ্ব নিয়ে নিজ দলের সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালিয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের ধারণা হামলাকারীরা এতই ক্ষমতাধর যে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশের পরও তারা ধরা পরেনি। আর এ ঘটনায় কাউকে আটক কিংবা কোন তথ্যই নেই পুলিশের কোছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ঘটনায় জড়িত যেই হোক তাকে গ্রেফতারে পুলিশকে বললেও সেটি কর্ণপাত হয়নি তাদের।
এ ব্যপারে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু বলেন- আগস্ট সিলেটে আওয়ামী লীগের শোকসভায় কেন্দ্রীয় নেতারা রশীদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন থেকে বিরত থাকি। কিন্তু গত একমাসেও এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
হামলার শিকার হওয়া এম. রশীদ আহমদ বলেন- ২৩ দিন ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে এখন বাসায় আছি। চিকিৎসকরা বলেছেন দেশের বাইরে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে। গতকাল ঘটনার একমাস হলেও এখনো জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। শুনেছি প্রবাসী এক বিএনপি নেতাকে আমার উপর হামলার মামলায় জড়ানো হচ্ছে। আমি চাই প্রকৃত হামলাকারীরা বেরিয়ে আসুক।
উল্লেখ্য, সিলেট নগরীর দর্শন দেউড়ি এলাকায় গত ২০ আগস্ট রাতে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি এম. রশীদ আহমদ। প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে রশীদের দুই হাত, বুক, পীঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
(তথ্যসূত্র: সিলেটভিউ২৪ডটনেট)