স্টাফ রিপোর্টার, তাহিরপুর::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তাহিরপুর সদর থেকে বাদাঘাট ইউনিয়ন পর্যন্ত সড়কে বরাদ্দ প্রায় ৪ কোটি টাকা। এই সড়কের বাদাঘাট বাজার থেকে পাতারগাঁও (ইসলামপুর) গ্রাম পর্যন্ত সড়কটিতে নাম মাত্র কাজ করছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন। এছাড়াও প্রশাসনিক সঠিক তদারকি না থাকার কারনে সড়কের গর্তে মাটি না দিয়েই এবং সড়কটিতে উচুঁ নিচু সমান না করেই নিন্মমানের বালু, পাথর ব্যবহার করেই নামমাত্র বিটুমিনের ঢালাই দিয়ে দায়সারা কাজ করছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন। অন্যান্য পয়েন্টে যে কাজ হচ্ছে তা একবারেই নিন্ম মানের।
জানা যায়, উপজেলার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রান কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত বাদাঘাট বাজার। উপজেলা সদর থেকে বাদাঘাট বাজারের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। বাজারের উপর দিয়ে বড়ছড়া, বাগলী, চারাগাঁও শুল্কষ্টেশনসহ কয়েকটি পর্যটন এলাকা, হিন্দু সম্প্রদায়ের পর্নর্থীত স্থানসহ পর্যটন এলাকায় যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। এছাড়াও বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে এই সড়ক সংলগ্ন ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু করলেও এখনও কাজের কোন আশানুরুপ ফল দেখা যায় নি। যে কাজ করা হয়েছে তা এখনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ সড়কে চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে সর্বস্থরের জনসাধারন। এই সড়কের একাধিক স্থানেই মেরামত করার নামে রাস্তা ভেঙ্গে রাখা হয়েছে। কিন্তু কাজ করছে না।
তাহিরপুর উপজেলা এলজিইডি কার্য্যালয় ও একাধিক স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জিওবি প্রকল্পের মাধ্যমে এই সড়কে তিনটি ভাগে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে শুষ্ক মৌসুমে। দায়িত্ব পেয়েছেন দু-জন কনট্রাক্টার। তাহিরপুর থানার সম্মুখ থেকে সূর্যেরগাঁও ভাঙ্গা ও টাকাটুকিয়া পর্যন্ত, টাকাটুকিয়ার ব্রীজ সংযোগ ও এর থেকে পাতারগাঁও পর্যন্ত এবং পাতারগাঁও (ইসলামপুর) থেকে বাদাঘাট বাজার পর্যন্ত। এতে বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার অধিক। এর মধ্যে প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বাদাঘাট-পাতারগাঁও সড়কের জন্য। কিন্তু এই সড়কের বাদাঘাট-ইসলামপুর গ্রাম পর্যন্ত যে কাজ হচ্ছে তা এক বারেই নিন্ম মানের। এছাড়াও অন্যান্য কাজ গুলো নাম মাত্র কাজ করছে আর অনেক স্থানের কাজ এখন এক বারেই বন্ধ রেখেছে দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
শুয়েব নামে একজন বলেন,নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। এত নিন্ম মানের কাজ হচ্ছে কেন জানতে চাইলে বলেন, এই ভাবেই কাজ করার কথা।
এবিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন জানান, কনট্রাক্টারদের বার বার তাগিত দিচ্ছি। তারপরও তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের তিনটি অংশের কাজ করতে তারা দেরি করছে। বিটুমিনের কাজ বৃষ্টির কারনে করতে সমস্যা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বিটুমিনের কাজ হচ্ছে। কোন অনিয়ম হলে থাকলে খোজঁ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব জানান, এই সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ আমি নিজেও দেখেছি। আমি এই সড়কের দায়িত্ব প্রাপ্তদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি এই উপজেলার জন্য খুবেই গুরুত্বপূর্ন। এই সড়কটিতে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। জনদূর্ভোগ কমাতে মেরামতের কাজ ভাল ভাবে দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।