স্টাফ রিপোর্টার::
দোয়ারাবাজার উপজেলার চিলাই নদীতে রাবার ড্যাম নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সুনামগঞ্জ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। মামলায় রাবার ড্যাম নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার, ম্যানেজার, প্রকৌশলী, থানার এসআইসহ ১৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা নং ১৪/২০১৮। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে দুদককে তদন্তের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
আসামীরা হলেন, ব্রাম্মণবাাড়িয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা কামালের স্বত্তাধিকারী মোস্তফা কামাল, ম্যানেজার সাজিদুল হক, রাবার ড্যাম নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, সিলেট বিএডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী প্রণজিত দেব, সুনামগঞ্জ বিএডিসির সহকারি প্রকৌশলী হুসাইন মোহাম্মদ খালেদুজ্জামান এবং দোয়ারাবাজার থানার এসআই হাবিবুর রহমানসহ ১৬ জন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, চিলাই নদী উত্তর বালিছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি.মি. নামের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শিব্বির আকন্দ সমিতির পক্ষ থেকে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণের জন্য এলজিইডি ও বিএডিসি বরাবরে লিখিত আবেদন জানান। পরবর্তীতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেকে) ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ১০টি রাবার ড্যাম নির্মাণ অনুমোদন করে। এর একটি চিলাই নদীতে রাবার ড্যাম নির্মাণ প্রকল্প। ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি মেসার্স মোস্তফা কামালকে ৭ কোটি ৯৪ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬৭৪ টাকায় চিলাই নদী রাবার ড্যাম নির্মাণ প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। অভিযোগকারী আদালতে উল্লেখ করেন শুরু থেকেই নি¤œমানের কাজ বাস্তবায়ন করায় সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ শেষ করার জন্য আবেদন নিবেদন করে সমিতি। এলাকার উন্নয়ন ও কৃষির স্বার্থে সঠিকভাবে কাজ শেষ করার জন্য বাস্তবায়নকারীদেরও তারা আহ্বান জানায়। যার ফলে ১ ও ২নং আসামী অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে। অভিযোগকারী মরা খাসিয়া নদীর একটি উপপ্রকল্পের নামমাত্র নদী খনন করে ২৪ লক্ষ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করেন তিনি। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন রাবার ড্যাম প্রকল্পে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি টাকার বিল উত্তোলন করা হলেও ভালো নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করে বরাদ্দকৃত টাকার ৬০ ভাগ ঠিকাদারের পকেটে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উন্নয়নের লক্ষ্যে তৃণমূলে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার না করে আতœসাতের প্রচেষ্টা চলছে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।
মামলার আইনজীবী এডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ক্রিমিনাল ল’ এমেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট ১৯৫৮ এর ৪ (১ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ এর ১৩ (৩) বিধির আলোকে এই মামলাটি সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে দুদকে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি আদালতের দাখিল করার পর পরবর্তীতে দুদককে তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।