1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

বাংলাদেশের সব পাওয়ার সিরিজ: হোয়াইটওয়াশ জিম্বাবুয়ে

  • আপডেট টাইম :: শনিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮, ২.৫৯ এএম
  • ২৯৯ বার পড়া হয়েছে

নোমান মোহাম্মদ::
এক রান নিয়ে প্রান্ত বদল করে লাফ দিলেন তিনি শূন্যে। যেন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি উপেক্ষা করে উড়ে যেতে চান মহাশূন্যে।
উড়তে উড়তেই মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুড়ে দেওয়া, মুখে বুনো উল্লাসের চিৎকার। তাতেই বোধ করি সব সমালোচনার জবাব, সব আস্থার প্রতিদানও। এমন এক সেঞ্চুরির জন্য কত দিনের অপেক্ষা সৌম্য সরকারের!
ইমরুল কায়েসের প্রতীক্ষা তেমন ছিল না। এ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই তো সেঞ্চুরি পেয়েছেন। সমালোচনার জবাব, আস্থার প্রতিদান দেওয়ার ব্যাপারস্যাপারও সারা হয়ে যায় আগে। এশিয়া কাপে ওভাবে উড়ে গিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ছয় নম্বরে নেমে অপরাজিত ৭২ রান; চলতি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ১৪৪ ও ৯০ রানের দুটি ইনিংসেও।

তবু সেঞ্চুরি তো সেঞ্চুরিই। আর ইমরুলের সে উদ্যাপনও হলো সতীর্থ সৌম্যর মতোই। শূন্যে লাফিয়ে।

দল হিসেবে বাংলাদেশের আনন্দ হয়তো অমন আকাশছোঁয়া না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় যে এখন ভীষণ রকমের প্রত্যাশিত! আগের দুই খেলার ধারাবাহিকতায় কালও প্রত্যাশা পূরণ করে স্বাগতিকরা। সাত উইকেটে জিতে হোয়াইটওয়াশ করে প্রতিপক্ষকে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিপর্বের এ ধাপটি দারুণভাবেই পেরোলো মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।

অথচ ম্যাচের প্রথমার্ধে বাংলাদেশের এমন দাপুটে জয়ের কথা ভাবা যায়নি। শন উইলিয়ামসের সেঞ্চুরি এবং ব্রেন্ডন টেলরের ৭৫ রানে জিম্বাবুয়ের পাঁচ উইকেটে ২৮৬ রানের চূড়ায় চড়ার সময় না। স্বাগতিকদের ব্যাটিং ইনিংসের প্রথম বলে লিটন দাসের উইকেট তুলে নেওয়ার সময় আরো না। কিছুটা হলেও তখন ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। কিন্তু সে চাপ জয়ে কী রাজসিক ব্যাটিংই না করলেন ইমরুল-সৌম্য!

রাজসিকতায় সৌম্যর নামটিই আসবে আগে। এমনিতেই তাঁর ব্যাটিং চোখের জন্য প্রশান্তির। ক্যারিয়ারের প্রথম ভাগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুটো ম্যাচজয়ী ইনিংসের সৌন্দর্য-কথা বাংলাদেশের ক্রিকেট আড্ডায় আলোচনা হয় এখনো। তবে সে ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি। রানখরায় ভোগা সৌম্যর ওপর থেকে একসময় আস্থার হাত তুলে নেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এ সিরিজের স্কোয়াডেও তো ছিলেন না। তৃতীয় ওয়ানডের আগে জাতীয় লিগে খেলার মাঝপথ থেকে ডেকে এনে যোগ করা হয় তাঁকে। আগের দিন দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে কাল মাঠে নেমে যান ফজলে মাহমুদের বদলে। করেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ৯২ বলে ১১৭ রানের ইনিংসে ৯টি চার ও ছয়টি ছক্কা। প্রতিটি শটই আভিজাত্য মাখা।

রাজসিকতায় পিছিয়ে থাকলেও কার্যকারিতায় ইমরুল পিছিয়ে নন কোনোভাবেই। ১১২ বলে করেন ১১৫ রান। সঙ্গে প্রথম দুই ওয়ানডের ১৪৪ ও ৯০ রানের ইনিংসের যোগফলে সিরিজে তাঁর মোট রান ৩৪৯। দ্বিপক্ষীয় সিরিজে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ৩১২ রান করা তামিমকে যান ছাড়িয়ে। আর শুধু বাংলাদেশ কেন, তিন ম্যাচ সিরিজে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ডও তো ছিল ইমরুলের নাগালে। শেষ পর্যন্ত হয়নি তা। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে পাকিস্তানের বাবর আজমের ৩৬০ রানের চেয়ে ১১ রান পিছিয়ে থাকলেন ইমরুল।

কাল শূন্য রানে প্রথম উইকেট পতনের পর ২৯.৫ ওভারে ২২০ রানের জুটি ইমরুল-সৌম্যর। ওয়ানডেতে দ্বিতীয় উইকেটে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। আগের রেকর্ড ২০৭ রানের; তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান এ বছরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গড়েছিলেন। ওয়ানডেতে সব উইকেট মিলিয়ে দেশের সর্বোচ্চ রানের জুটিতে অবশ্য নিজেদের নাম লেখাতে পারেননি এ দুজন। গত বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব-মাহমুদ উল্লাহর ২২৪ রানই থাকল সবার ওপরে। ঠিক যেমন এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কায় তামিম। ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই চট্টগ্রামে ৯৫ রানের ইনিংসে ৭ ছক্কা ওই বাঁ-হাতির। কাল সৌম্যর ছক্কা ছয়টি; সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ইমরুলের ১৪৪ রানের ইনিংসেও তাই ছিল।

সৌম্য-ইমরুলের এমন ব্যাটিং তাণ্ডবের দিনে জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেওয়া তিন শ ছুঁই ছুঁই লক্ষ্যটা তাই অসাধ্য থাকে না; হয়ে যায় অবলীলা। ৭.৫ ওভার হাতে রেখে সাত উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। যে জয়ে দলের প্রাপ্তির আনন্দ যতটা, তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয় সৌম্য-ইমরুলের ব্যাটিং।

দুজনের সামর্থ্যের আকাশ একেবারেই আলাদা। তবে দুই আকাশেই জমে উঠেছিল একই রকম সংশয়ের মেঘ। সে মেঘমালায় যে বজ লুকানো, কে জানত! ইমরুলের ব্যাটের বজ বীণা কিছুটা মন্থরলয়ের। মেঘ সরিয়ে সে সুরে মাতিয়ে রাখছেন তিনি এশিয়া কাপ থেকেই। সৌম্যর ব্যাটের মৌতাত আলাদা, সেখানে উচ্চকিত উপস্থিতি ধ্বংসের গানের। ভেঙে যাওয়া সেই বজ বাঁশির সুর আবার কত কত দিন পর শোনা গেল কাল।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতিপর্বে এসবের চেয়ে ভালো খবর আর কী হতে পারে বাংলাদেশের!

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!