একাত্তরে আমার বয়স পাঁচ কিংবা ছয় বছর ।সে সময় আমি মুক্তিযুদ্ধ বুঝি আশেপাশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে । এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আমাদের পরিারের যারা সুনামগঞ্জে ছিলেন তারা গ্রামেরবাড়ি চলে আসেলন । ঢাকা থেকে আসলেন মেজ চাচা আব্দুল আউয়াল, সুনামগঞ্জ থেকে সেজ চাচা লোকমান হেকিম । শুনলাম অন্তসত্ত্বা মেজচাচীকে রাখা হলো চাচার শ্বশুরের গ্রামের বাড়ি নারায়ণপুরে । বড়ভাই হূমায়ুন কবির সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মুসলিম হোস্টেল থেকে এক কাপড়ে চলে আসেন গ্রামের বাড়িতে।প্রতি সন্ধ্যায় গ্রামবাসীরা আমাদের বাড়িতে রেডিওতে বিবিসির শুনার জন্য জড়ো হতেন । রনাঙ্গনের খবর শুনতেন বোশেখ মাসের হাড়ভাঙা খাটুনির পরও । এর মাঝে প্রতিদিনই খবর আসত দু একজন পরিবারকে না জানিয়েই সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে চলে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিতে। প্রতি বাড়িতে বাবা মায়েরা রীতিমত পাহারা দিতেন যুবক ছেলেরা যাতে যুদ্ধ যেতে না পারে ।আমাদের প্রতিবেশী আজিম উদ্দিন দাদা পালিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে গিয়ে ধরা খেলেন তার মায়ের কাছে । সেই থেকে তার বাইরের ঘরে ঘুমানো বন্ধ হলো । যুদ্ধের নয় মাসই রাতে তাকে ঘুমাতে হতো বাবা মায়ের সাথে ভিতর বাড়িতে । পালানোরতিনি যে চেষ্ঠা
করেননি এমন নয় । প্রতিবারই মায়ের চোখকে ফাকি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সম্ভবতঃ মে জুনের দিকে যুদ্ধের তীব্রতা বাড়লো । আশপাশের এলাকায় হত্যা অগ্নিসংযোগ এবং নারী নির্যাতনের খবর আসতে লাগলো । সবাই ভীত । এ ভীতির প্রভাব মাতৃদুগ্ধপোষ্য কোলের শিশুর উপরও পড়লো । আমার ছোট ভাই কাজল তখন কেবলমাত্র কথা বলতে শিখেছে । খুব সকালে মা যখন মুখ ধোয়ার জন্য ঘাটে নিয়ে যেতেন তখন ও উদীয়মান সূর্যকে দেখে বলতো -আম্মা ঐ দেখ দতগাও ( পাশের হিন্দুদের গ্রাম দত্তগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণ ) পান্জাবীরায় (পাকিস্তানিরা ) আগুন লাগাই দিছে ।
গ্রামের লোকজন তাদের পক্ষে না মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তা জানার জন্য পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী ছোট বাচ্চাদেরকে জিজ্ঞেস করত জয় বাংলা না পাকিস্তান জিন্দাবাদ । জয় বাংলা বললেই চলত নির্বিচারে গুলীবর্ষন, হত্যা , অগ্নিসংযোগ ও নারী নির্যাতন । গ্রামে দুটো পতাকা থাকতো বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা আর পাকিস্তানি পতাকা । পাকিস্তানিরা আসার খবর পাওয়া মাত্র সাময়িক সময়ের জন্য তাদের পতাকা উড়ানো হত ।আমাদের বাড়ির কর্মসহায়ক ইউনুস ভাই পাকিস্তানি পতাকা উড়ানো এবং নামানোর সময় গোশালার ময়লা আবর্জনাযুক্ত ঝাড়ু দিয়ে আঘাত করত ঘৃনাভরে । বাকী সময়টা বাংলাদেশের পতাকা উড়ত পত পত করে দক্ষিণের বাতাসে। অত্যাচারের মাত্রা তীব্র হলে শুরু হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের দেশত্যাগ । শাল্লা এবং দিরাইয়ের দক্ষিণের ভাটি অঞ্চল থেকে ছইওয়ালা এবং ছইছাড়া শত শত নৌকায় হাজার হাজার লোকের ভারতে চলে যাওয়ার কথা আজও মনে আছে ।এক নৌকার প্রায় গা ঘেষে আর নৌকা -সদ্যভূমিষ্ঠ শিশু থেকে অশতিপর বৃদ্ধকে প্রাণের মায়ায় পালাতে হচ্ছে প্রিয় জন্মস্হানকে পিছনে ফেলে । নিরাপদে যে ওপারে পৌছতে পারবে তারও নিশ্চয়তা কতটুকু ।ছোট নৌকায় গোটা পরিবারকে নিয়ে আর মনে সীমাহীন দুশ্চিন্তা নিয়েই পাড়ি জমাতে হচ্ছে বিদেশ বিভূইয়ে । খুব নিকটজন যারা তারা আমাদের ঘাটে নৌকা লাগিয়ে শেষ বিদায় নিলেন অশ্রুসজল চোখে ।পাশের গ্রামের শ্যাম কাকা আর লালু কাকা ভারত চলে যাবেন । এই হিন্দু পরিবারটি শুধু ধর্মবিশ্বাসে আমাদের ছেয়ে আলাদা ছিল কিন্তু সামাজিক,সাংস্কৃতিক কিংবা মৌসুমি এমন কোন পার্বন ছিল না যেখানে আমাদের দুই পরিবারের সদস্যরা নিমন্ত্রিত হতো না। ছোট চাচার বিয়ের সময় সারাক্ষণ শ্যাম কাকাকে বাবার সাথে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেল । বিয়ের বাজার করা , স্বর্ণকারের কাছে গয়না তৈরী করা, বরের জন্য পানশি সাজানো ইত্যাদি বিষয়ে বাবার পরেই সিন্ধান্ত নিতেন শ্যাম কাকা । শ্যাম কাকা আজ তার গোটা পরিবারকে একটি নৌকায় নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যত সামনে রেখে ভারতে পাড়ি জমাচ্ছেন -অসহনীয় এক দৃশ্য দুই পরিবারের জন্যই -সবার চোখের পাতা ভিজে উঠছে- গলা ভারী হয়ে আসছে । আমার মায়ের কাছে দাড়িয়ে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছেন দাস পরিবারের সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ যুবক কমল চান কাকা ।হাউ হাউ করে কাঁদছেন আর মাকে বলছেন-ভাবী দোয়া কইরন( করবেন) আমারার(আমাদের)দায়( জন্য) আমরা আরকবার( আরেকবার) দ্যাশ(দেশে) যাতে পিইরা আইতে(ফিরেআসতে )ফারি( পারি)।মাকে কাঁদতে দেখলাম ভিন্ন ধর্মীয় সন্তানের বয়সী এ সহজ সরল দেবরটির জন্য । মাকে এতই শ্রদ্ধা করতেন যে আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে সুরমার শাখা নদীর ওপার দিয়ে হেটে যাওয়া কমলচান কাকা ওপারে থেকেই মায়ের বার বার নিষেধ সত্বেও ষষ্টাঙ্গে প্রণাম করতেন । নদীর ওপার দিয়ে মাছ ধরতে যাওয়ার সময় হয়তো মার অগোচরে মাকে দেখেছেন এবং সেদিন হয়তো মাছ একটু বেশী ধরেছেন কাকতালীয়ভাবে । আর যায় কোথায় ?যে মাছ ধরেছেন তা থেকে দুই চারটা আমাদের কে দিতে হবে কারণ কমলচান কাকার ধারণা তাঁর ভাবীর (আমার মা) আশীর্বাদেই আজ মাছ বেশী ধরা পড়েছে । আমাদের স্বর্গসুখ সহ্য করতে পারলো না পাকিস্তানি হায়েনারা । শ্যাম কাকার পরিবারকে নিয়ে নৌকা ভাসলো আমাদের ঘাট ছেড়ে ।আমাদের বাড়ির সকল সদস্য চেয়ে থাকলো ।নৌকাটি একসময় দৃষ্ঠিসীমার বাইরে চলে গেল।
ধীরে ধীরে আমাদের পাশের গ্রাম মধুপুরের দাশহাটি শূন্য হয়ে গেল একমাত্র উপেন্দ্র সাধু ছাড়া। এই সাধু গেরুয়া পোষাক পড়তেন । যদ্দুর মনে পড়ে হাতে ত্রিশুল জাতীয় কিছু একটা থাকতো। নদী সাতরে মধুপুর থেকে আমাদের গ্রাম আনোয়ারপুরে আসতেন । গান বাজনা মেতে থাকতেন । কেউ কেউ বলতেন- ও সাধু ইন্ডিয়া যে গেলায় না পানজাইব্বে তো মাইরালাইবো ।(এই যে সাধু ইন্ডিয়া যে গেলে না , পাকিস্তানি সৈন্যরা তো তোমাকে মেরে ফেলবে)
– আমারে মারত না । আমি চার কলিমা ফারি। আমার দারিমুছও আছে (আমাকে মারবে না । আমি চার কালেমা জানি । আমার দাড়ি গোঁফও আছে)।
-ইতা কইলে কাম অইত না । হারামজাদারা কাপর খুইল্লাও দেকে ।( এসব বললে কাজ হবে না । পাকিস্তানি হারামজাদারা কাপড় খুলেও দেখে)
-তর লাকান পুলা বয়সের যারা তারারে দেখে । আমরার লাকান মুরুব্বিরারে ইতা করে না ।( তোদের মত ছেলে ছোকরাদের ওসব করে । আমাদের মত মুরুব্বিদের সাথে ওসব করে না)।উপেন্দ্র সাধু অঘটন ঘটন পটয়সী এক লোক । তারঁ তাক লাগিয়ে দেয়ার মত বুদ্ধিমত্তার আরো অনেক কাহিনী আছে যা পরে বলব।
আমাদের কৃষিনির্ভর গ্রামগুলোর অবস্থা বর্ণনাতীত হলো ।ধানই আমাদের প্রাণ । সারা বৎসর চলতে হতো ধান বিক্রির টাকায় । পড়ালেখা করেও আমাদের লোকজন খুব একটা চাকুরি বাকরি করত না । চাকুরি মানে তাদের কাছে এ ধরণের গোলামী ছিল । ফলে স্বেচ্ছায় শিক্ষিত বিরাট একটা বেকার শ্রেণি গড়ে উঠে যাদের কাজ হচ্ছে স্থানীয় স্কুলসমুহে অবৈতনিক শিক্ষকতা করা ।কিন্তু গোলাভর্তি ধান একাত্তরে তেমন কোন কাজেই আসল না । ভারতে যারা গেলো তাদেরকে তো পানির দরে ধান বিক্রি করতে হলো । অনেকে আবার গোলাভর্তি ধান পিছনে ফেলে ভারতে পাড়ি জমালো ।মধুপুরের দাশহাটি এবং আমাদের তিন কিমি উত্তরের দত্তগ্রাম একেবারে জনশূন্য হয়ে পড়ল।যে পাখিগুলো বসত বাড়ি আশেপাশে মানুষের উচ্চিষ্ঠ খেয়ে জীবনধারণ করে যেমন কাক সেগুলো পড়লো ভীষন বিপাকে । মানুষই নাই । তাদের ময়লা আবর্জনা পাওয়ার তো প্র্শ্নই আসে না ।তাই প্রতিদিন সকালে কাকেরা দলবেধে তিন কিমি হাওর জলমগ্ন পথ বিরতিহীনভাবে উড়ে এসে পৌছত আমাদের গ্রামে । সারাদিন আমাদের গ্রামে থেকে উদর পূর্তি করে সূর্যাস্তের কিছু পূর্বে ফিরে যেত আবার দত্ত গ্রামে । শুনেছি হিন্দু সমপ্রদায়ের রেখে যাওয়া হাস মোরগ গুলো রীতিমত বুনো হতে শুরু করেছিল।লোভী মানুষ যে ছিল না এমন নয় কিন্তু এগুলোতে কেউ হাত দেয়ার সাহস পেত না কারণ বর্ষায় সুনামগঞ্জ প্রায় মুক্তাঙ্গন হয়ে গিয়েছিল ।পাকিস্তানীরা আসলে অনেক দূর থেকেই তাদের অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতেন মুক্তিযোদ্ধারা ।আশেপাশে মুক্তিযোদ্ধারা আছেন জেনেই লোভীরা হিন্দু সম্পদে ভাগ বসাতে সাহস পেত না।জীবন থেমে থাকে না ।যুদ্ধের ডামাঢোলের মাঝেও জীবন চলে জীবনের নিয়মে ।মৃত্যুর খবর আসে আর সেইসাথে খবর আসে জন্মেরও।
আমাদের পরিবারে আমরা সাতভাইয়ের সাথে রতন নামে আমাদের এক চাচাত ভাইও ছিল । রতনকে আবার আমাদের দুধভাইও বলা যায় কারণ জন্মের পর ওর মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওকে আমাদের মায়ের দুধ খেতে হয়। সেই কারণে ও আমাদের কাছে চাচাত ভাইয়ের ছেয়েও বেশী কিছু।যাক আমরা আটভাই মোটামুটি আমাদের বাড়ি মাতিয়ে রাখতাম হৈ হুল্লোরে । তারপরও আমাদের একজন বোনের জন্য নিত্য হাহাকার বিরাজ করতো ।আট ভাইয়ের সংসারে সবাই যেন বোনের অপেক্ষায় ছিলাম । অবশেষে আল্লাহ যেন আমাদের মনের কথা শুনলেন। হিসাবে ভুল না হলে ১৯৭১ এর সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর মাসে আমাদের মেজচাচার মেয়ে ফারহানা শেলীর জন্ম হল ।পরীর মত ফুটফুটে এ বোনটির জন্ম যুদ্ধের সেই অশান্ত, অনিশ্চিত এবং বিপদসংকুল পরিস্থিতির মাঝেও আমাদের পরিবারে আনন্দ বন্যা বইয়ে দিল ।বাবা বহুআরাধ্য এ কন্যাসন্তানের জন্ম উদযাপন করলেন ।খাসি জবাই করে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদেরকে আপ্যায়ন করালেন যখন এমন এক সময়ে যখন আমার স্কুল পড়ুয়া ভাইদের পড়তে শুনতাম-
সে অনেক অনেক দিন আগের কথা -লোকেরা তখন মারামারি হানাহানি করত-মেয়ে শিশু হলে জীবন্ত কবর দিত।আমাদের সংসারে কন্যাশিশুর অভাব ছিল সবসময়ই ছিল।আমাদের সংসারের প্রথম সন্তানই ছিল আমাদের এক বোন।মায়ের কাছ থেকে শুনেছি জন্মের পর সে মাত্র আধ ঘন্টা বেচেছিল। তারপর আমরা ছয়ভাই অর্থাৎ আমার পরেই আমার আর এক বোনের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু পৃথিবীতে অবস্থানের ক্ষেত্রে সে আমাদের প্রথম বোনকে প্রথম হতে দেয়নি।জন্মের মাত্র মিনিট পনেরের মধ্যেই সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়।কন্যাশিশুর জন্মের কথা শুনেই আমার বাবা মেজচাচাকে টেলিগ্রাম করেন বাড়ি থেকে ৭ কিমি দূরে অবস্থিত দিরাই থানা সদরে গিয়ে -A baby girl born, mother & baby safe. দিরাই থেকে ফেরার অনেক আগেই আমারদের বোনটি মারা যায় ।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আমাদের মেজচাচা খুশী হয়ে ভাতিজির নাম রত্না রেখে ফিরতি টেলিগ্রাম করলেন যা পৌছল বোনটি মারা যাওয়ার দুদিন পর।যাক শেলীর জন্মের ৪০ দিন পর নারায়ণপুর থেকে মা মেয়েকে আনার আয়োজন মহাসমারোহে চলতে থাকে । আবার পাশাপাশি ভয়ও কাজ করে । কারণ হাওরবেষ্ঠিত সুনামগঞ্জের উচু জায়গাগুলো দখল
করে রেখেছিল পাকিস্তানি হায়েনা অথবা তাদের দোসর রাজাকাররা ।হাওরে কোন নৌকা ভাসমান দেখলেই তারা সেটাতে মুক্তিবাহিনী আছে কিংবা কেউ শরণার্থী হয়ে ভারতে যাচ্ছে ভেবে গুলি চালাত।মাসখানেক আগে সেজচাচার বিএসসি পরীক্ষার ব্যবহারিক পরীক্ষা দেয়ার জন্য খোলা নৌকায় বাবাসহ যখন সুনামগঞ্জ যাচ্ছিলেন তখন জয়কলসের কাছাকাছি দেখার হাওরে তাঁদের নৌকা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছিল। হাওরে ভাসমান কুচুরিপানা ও নলখাগড়ার পিছনে নৌকা আড়াল করে কোনরকমে দুভাই সেদিন প্রাণে বেচেছিলেন ।তাই নারায়ণপুর যেতে হবে খুব সাবধানে । অনেক পথ ঘুরে ।বাবা নিজেই যাবেন মাঝিমাল্লাদের নিয়ে । বড়ভাইও যাবেন তাদের সাথে।আমার খুব ইচ্ছে হল নারায়ণপুর যাওয়ার । কিন্তু আমি এত ছোট যে আমার আবদার কেউ রাখবে না । তারপরও মনের কথাটি মাকে জানালাম। মা এ নিয়ে বাবার সাথে কথা বলতে সাহস করলেন না।ঐদিন শিশু শেলীসহ চাচীকে আনোয়ার পুর আনা হলো ।সারা বাড়ি আনন্দে মুখর হলো। মা মেয়েকে আরামে রাখা যায় কিভাবে তা নিয়ে সবাই ব্যস্ত হলো।মা ব্যস্ত হলেন কিভাবে চাচীর জন্য পুষ্টিকর খাবার জোগার করা যায় তা নিয়ে ।বাবার রাইসমিলের হালখাতার নামের জায়গায় কোন নাম ছিল না ।কিন্ত পরের দিন বুঝলাম সেখানে কোন নাম লেখা হয়েছে ।প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া বড় ভাইকে বললাম -দেখ না পড়ে কি আছে ওখানে ।
বানান করতে অনেকটা সময় নিয়ে ভাইয়ের উত্তর-শেলীনা রাইস মিল ।
বুঝলাম আমাদের রাইসমিলের নামও শেলীর নামে রাখা হয়ে গেছে।বাবার কথা থেকে বুঝলাম শুধু হালখাতায় নয় সাইনবোর্ড না কি একটা জিনিসও নাকি বানাবেন শেলীনা রাইসমিলের নামে।