স্টাফ রিপোর্টার ::
পিটিআই বধ্যভূমির প্রকৃত স্থান চিহ্নিত করতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিকর্মীরা। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তারা। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা জেলা প্রশাসককে সরেজমিন ঘটনাস্থল (পিটিআই সুপারের বাস ভবন) দেখান। উল্লেখ, গত মাসে পিটিআই বধ্যভূমির মূল জায়গায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধা মালেক হোসেন পীর। গত ৪ নভেম্বর আবারও তিনি জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করে মূল স্থানটিতে স্থাপনা নির্মাণের দাবি জানান।
জানা গেছে এ বিষয়ে গত সোমবার বিজয় দিবসের প্রস্তুতি সভায় কথা ওঠে। মুক্তিযোদ্ধারা পিটিআই বধ্যভূমির মূল স্থান দখলমুক্ত করে সেখানে স্থাপনা তৈরির দাবি জানিয়েছেন। এই দাবির প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্টরা সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী ও সুধীজন মূল বধ্যভূমি পিটিআই সুপারের বাসভবন অপসারণ করে এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, বিএনপি সময়ে ঐতিহাসিক মূল স্থানটির বদলে পিটিআই পুরুষ হোস্টেলের বাথরুমের টেংকির পাশে বধ্যভূমি চিহ্নিত করে নামকাওয়াস্তে স্মৃতিসৌধ তৈরি হয়। এসময় মুক্তিযোদ্ধা মালদার আলীসহ কয়েকজন এই স্থানের বদলে মূল স্থানে স্থাপনা নির্মাণের দাবি জানালেও সংশ্লিষ্টরা তাদের দাবি না মেনে অন্য স্থানে বধ্যভূমির স্থাপনা তৈরি করা হয়। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সরকারের নির্দেশে দেশের সকল স্থানে বধ্যভূমিসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি সুনামগঞ্জ পিটিআই বধ্যভূমি সংলরক্ষণ ও স্থাপনা নির্মাণেও দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু বধ্যভূমির মূল স্থানের বদলে অন্যত্র স্থান নির্ধারণ করায় প্রতিবাদ করে আসছেন মুক্তিযোদ্ধারা। তারা পিটিআই সুপারের বাসভবন অপসারণ করে এখানে বধ্যভূমির স্থাপনা নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। মুুক্তিযোদ্ধাদের দাবির প্রেক্ষিতেই জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে।
এডভোকেট আইনুল ইসলাম বাবলু বলেন, বিএনপির সময়ে যখন পিটিআই বধ্যভূমি সংরক্ষণের নামে অন্য একটি স্থান নির্ধারণ করে স্থাপনা চিহ্ন তৈরি করা হয় তখন মুক্তিযোদ্ধা মালদারসহ আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন তারা আমাদের কথা শুনেননি। তিনি বলেন, গতকাল জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করে মুল স্থানটিতে বধ্যভূমির স্থাপনা নির্মাণের দাবি জানিয়েছি।
পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল আহমেদ, প্রবীণ শিক্ষক ধুর্জুটি কুমার বসু, মুক্তিযোদ্ধা নূরুল মোমেন, আব্দুল হাসিম, আবু সুফিয়ান, মালেক হুসেন পীর, এডভোকেট মতিউর রহমান পীর, এড. সাংবাদিক আইনুল ইসলাম বাবলু, শহিদ জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সালেহ আহমদ প্রমুখ।