1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

বাড়ি নির্মাণের নামে লন্ডনী নারীর কাছ থেকে কোটি টাকা প্রতারণা: সিলেটে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

  • আপডেট টাইম :: বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২.৩৭ এএম
  • ২৭৮ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::
সিলেট জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফারিক । তার দুই ছেলে প্রবাসে থাকে লন্ডন। ছেলেদের সাথে পরিচয় হয় লন্ডনে অবস্থানরত বৃটিশ নাগরিক পারভিন বেগমের। সেই সুবাদে ছেলেদের মাধ্যমে ঐ নারীর পরিচয় হয় ফখরুল ইসলাম ফারুকের সাথে।
পারভিন জন্মসূত্রে বাঙ্গালি। তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার বৈরিদলন গ্রামে। তিনি প্রবাসে থাকায় দেশে তার জমিতে বাড়ি করার ইচ্ছা পোষণ করেন। এতে ফখরুল ইসলাম ফারুক বলেন তিনি বিল্ডিং নির্মাণের যাবতীয় কাজ করে দিবেন। আর এতে ৫ কোটি টাকা খরছ হবে। লন্ডন প্রবাসী ঐ মহিলা বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ফখরুল ইসলাম ফারুককে বিভিন্ন সময়ে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ও ২টি ব্লাংঙ্ক চেক প্রদান করেন।
কিন্তু ফারুক টাকা নিয়ে কোন কাজ করাননি। উল্টো ঐ বৃটিশ নাগরিককের কাছে ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি, মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় বৃটেন প্রবাসী পারভীন বেগম বাদী হয়ে এসএমপি’র জালালাবাদ থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। যার নং ১৭(১১)১৮ ইং।
ঐ মামলায় গত রোববার (২ ডিসেম্বর) নগরীর পাঠানটুলার পার্কভিউ এলাকার মৃত হাজী রহিম উদ্দিনের ছেলে ও সিলেট জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফারুককে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে জালালাবাদ থানা পুলিশ। তাছাড়া টাকা আত্মসাৎ ও চাঁদাবাজির ঘটনায় ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডেরও আবেদন করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
এ মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, ফারুকের সহযোগী এসএমপি’র শাহপরাণ (রহ.) থানার টুলটিকর কুশিঘাটের মৃত তাহির আলীর ছেলে মো. সাজ্জাদ মিয়া (৪৩), সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার আলী নগর গ্রামের মৃত মোজাহিদ আলীর ছেলে রুহুল আমীন মজিদ (৪০)। এই দুইজন বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার বৈরিদলন গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী পারভিন বেগম একজন বাঙ্গালী ব্রিটিশ নাগরিক। আর ফখরুল ইসলাম ফারুকের দুই ছেলে লন্ডন প্রবাসী। লন্ডনে পারভিন বেগমের বাসার পাশেই বসবাস করেন ফারুকের দুই ছেলে। তাদের সাথে লন্ডন প্রবাসী ব্রিটিশ নাগরীক ঐ মহিলার সু-সর্ম্পক ছিল। সে সুবাদে ফখরুল ইসলাম ফারুকের সাথে পরিচয় হয় । ফোনে কতাবার্তাও হয়।
এক পর্যায়ে বৃটিশ নাগরিক ঐ নারী মৌলভীবাজারে তার নিজ জায়গায় ভবন নির্মাণের কথা বললে ফারুক বলে সে তার ত্বত্তবাবধানে ৮তলা বিশিস্ট ভবন নির্মাণ করে দিবেন। এ ব্যাপারে আলাপ আলোচনার জন্য ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারী বাংলাদেশে এসে ১৫ জানুয়ারী বিল্ডিং নির্মাণের জন্য কথাবার্তা হয় ঐ প্রবাসীর। আর ফারুক বলেন ঐ জায়গায় বিল্ডিং করতে হলে ৫ কোটি টাকা লাগবে। পরবর্তিতে বিল্ডিং নির্মাণের জন্য নির্মাণকারী প্রতিষ্টানের সাথে চুক্তির জন্য সিদ্ধান্ত হয়।
এক পর্যায়ে ফারুক ঐ প্রবাসী নারীকে বলেন নির্মাণ কাজের মালামাল পূর্বে ক্রয় করলে অনেক টাকা লাভ হবে। এতে মালামাল ক্রয়ের জন্য সরল বিশ্বাসে প্রবাসী ঐ নারী টাকা পাঠানো শুরু করেন ফারুকের ন্যাশনাল ব্যাংক সুবিদবাজার শাখার একাউন্টে। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে প্রবাসী ঐ নারী পুনরায় দেশে আসলে ফারুক ঐ নারীর সাথে পরিচয় করিয়েদেন তার সহযোগী এসএমপি’র শাহপরাণ (রহ.) থানার টুলটিকর কুশিঘাটের মৃত তাহির আলীর ছেলে মো. সাজ্জাদ মিয়া (৪৩), সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার আলী নগর গ্রামের মৃত মোজাহিদ আলীর ছেলে রুহুল আমীন মজিদ (৪০) ।
এদের মধ্যে সাজ্জাদ মের্সাস জান্নাত ট্রের্ডাসের মালিক বলে পরিচয় করিয়ে দেন। আর বলেন এরা বিল্ডিং নির্মাণ করবে। ফলে ৮ তলা বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ৫ কোটি টাকার চুক্তি হয় তিনজনের সাথে। ভবনের কাজের শুরুতেই জামানত হিসাবে প্রবাসী ঐ নারীর কাছ থেকে টাকার পরিমাণ না লিখে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখার একটি ব্লাংক চেক রাখেন ফারুক। তাছাড়া কাজ করানোর জন্য পার্টিকে দেয়ার কথা বলে আরো একটি অলিখিত চেকও রাখা হয়।
পরবর্তিতে ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারী ট্রাস্ট ব্যাংক সিলেট শাখার মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকার একটি পে-অর্ডার ও পরবর্তিতে বিভিন্ন সময়ে ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয় ফারুকের কাছে। টাকাগুলো প্রদানের পর থেকে বির্ল্ডিং নির্মাণ না হওয়ায় প্রবাসী ঐ নারী আবারও দেশে আসেন এবং দীর্ঘ এক বৎসর কাজ না হওয়ায় টাকা ও চেক ফেরত চাইলে , তখন ফারুক বলেন চেকের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাছাড়া আরেকটি চেক হারিয়ে গেছে ।
আর এ ব্যপারে জিডিও করা হয়েছে বলেন তিনি। কিন্তু পরে ফারুক একটি চেকে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বসিয়ে আদালতে মামলা করেন। ঐ মামলায় প্রবাসী নারী জামিন নেন। গত ২০ নভেম্বর ফারুকের কাছে ঐ নারী তার চেক ও টাকা ফেরত চাইলে , তখন তিনি বলেন এগুলো নিতে হলে ২ কোটি টাকা চাঁদা প্রদান করতে হবে। অনথ্যায় এগুলো ফেরত দেয়া যাবে না। আর এ বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে হত্যা করা হবে বলেও হুমকী প্রদান করেন ফারুক ও তার সহযোগীরা।
মামলার বাদী প্রবাসী ঐ নারী তার অভিযোগের শেষ দিকে উল্লেখ করেন, ফারুক ও তার সহযোগীদের স্বভাব চরিত্র সর্ম্পকে তিনি জ্ঞাত না থাকায় তার সরলতার সুযোগে পরস্পর যোগসাজসে ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে। আর তিনি প্রবাসী মহিলা একাই দেশে আসা যাওয়া করেন। তিনি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন।
এ ব্যাপারে এসএমপি’র জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মো. হারুনুর রশিদ জানান, প্রবাসী নারীর টাকা আত্মসাৎ ঘটনায় ফখরুল ইসলাম ফারুককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া টাকা ও চেক উদ্ধারের জন্য ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডেরও আবেদন করা হয়েছে। আদালতের রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
উল্লেখ্য, এর পূর্বে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফারুক জাল গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই আটকা পড়েন। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে রোববার (৩ ডিসেম্বর ১৭ ইং ) রাত ৯টার দিকে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!