অনলাইন ডেক্স::
বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতীয় ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে চলমান সমস্যাগুলো দূর করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। আখাউড়ায় আজ তিনি জানান, ভিসাসংক্রান্ত সমস্যা সম্পর্কে তিনি অবগত। সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানে হাইকমিশনের কারিগরি-সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
হাইকমিশনার আরও বলেছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে বাংলাদেশের পাশে আছে ভারত। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা আজ সস্ত্রীক ত্রিপুরায় সরকারি সফরে যাওয়ার আগে আখাউড়া তল্লাশিচৌকিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ফাঁড়ির অতিথিশালায় দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। পুরো সময় তিনি কথা বলেছেন বাংলায়। দার্জিলিংয়ের লোক হলেও পড়াশোনা থেকে শুরু করে পেশাজীবনে বাংলার বাইরেই থেকেছেন। বাংলাদেশে হাইকমিশনার নিযুক্ত হওয়ার পর বাংলা ভাষাটা ভালোভাবে চর্চা শুরু করেছেন বলে জানালেন। বললেন, ‘বাংলা শিখছি। তবে এখনো পুরোপুরি রপ্ত করে উঠতে পারিনি।’
ভারতীয় ভিসা পেতে সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভিসার জন্য ই-টোকেন পেতে সমস্যার কথা আমি জানি। বিষয়টি নিয়ে সব পর্যায়ে আলোচনা করছি। হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। কীভাবে দ্রুত সমাধান করা যায়, তা দেখা হচ্ছে। ভিসা পেতে প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ করার চিন্তা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৬৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ৫ বছরের ভিসা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এখনো যেসব সমস্যা রয়েছে, তা-ও সহজ করা হবে।
এদিকে আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সড়ক চার লেন করার ক্ষেত্রে ভারত অর্থ সহায়তা দেবে বলে জানান হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নিবিড়। বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের বাণিজ্য প্রসারে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে রূপান্তর করা হবে। বাংলাদেশ সরকার জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ করেছে। ভারত এই সড়ক উন্নয়নের অর্থ দেবে। এ ছাড়া আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। ভারতীয় অংশের ৫ কিলোমিটারে কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে জমি অধিগ্রহণ করা হলে দ্রুত কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পেও অর্থ দেবে ভারত।
চার লেন সড়কের ক্ষেত্রে ভারত বেশি লাভবান হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, এই সড়ক হলে দুই দেশের বাণিজ্যের প্রসার হবে, দুই দেশই এতে লাভবান হবে। এককভাবে কেউ লাভবান হবে না।
ত্রিপুরার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে বেলা একটায় হাইকমিশনার আখাউড়া স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্টে পৌঁছে ভারত ও বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় তিনি জানান, ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে আখাউড়া-আগরতলা রেল, আশুগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আখাউড়া সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, ফেনীর মুহুরী নদীর ওপর সেতু নির্মাণসহ আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা হবে।
সে সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে ভারত বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়েও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।