স্টাফ রিপোর্টার::
প্রায় অর্ধ শতাধিক নৌকাকে অডিয়েন্স এবং একটি ভাল্কহেড নৌকাকে মঞ্চ বানিয়ে সুনামগঞ্জের জীববৈচিত্রের অনন্য জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওরে জোছনা উৎসব উদযাপন করছেন দেশ-বিদেশের হাজারো ভ্রমণার্থী। শনিবার সন্ধ্যা থেকে হিজলকড়চ ঘেরা হাওরের রৌয়া বিলে চলছে জোছনা উদযাপন। জোছনায় উজালা হাওরে এখন চলছে গানের তুফান। এই অঞ্চলের মরমী ও বাউল মহাজনদের গান গাইয়ে শোনাচ্ছেন শিল্পীরা। অনুষ্টান শুরুর আগে মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন হাওর এলাকার আদিবাসী শিল্পীরা। আলোচনা পর্বের পরই শিল্পী শাহনা ভেলি আর আশিক মরমী সুরের তুফান তুলেছেন রাতের জোছনাগলা হাওরে।
শনিবার দুপুরে হাওরে জোছনা উৎসবের উদ্দেশ্যে প্রায় অর্ধ শতাধিক নৌকায় হাজারো পর্যটক রওয়ানা দেন। যাওয়ার পথে হিজল কড়চের নিরব গানে তম্ময় হন তারা। হেসে-খেলে পর্যটকরা হাওরের নীলাভ জলে অবগাহন করে করে পাহাড়ঘেষা টেকেরঘাট খনিজ প্রকল্পে যান। সেখানকার পরিত্যাক্ত কোয়ারিতে (লেক) সবুজ পাহাড়ের স্থির ছায়া দেখে মুগ্ধ হন তারা। পরে আবারও ছুটে আসেন টাঙ্গুয়ার হাওরে। সন্ধ্যার আগেই নৌকাগুলো নোঙ্গর গেড়ে জোছনা উদযাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। দিনের আলো হাওরে ডুবে যাওয়ার পর যখন জোছনা দেয় তখনই শুরু হয় জোছনা উদযাপন।
এই হাওরের রুই মাছের ভাগার হিসেবে খ্যাত রৌয়া বিলের মধ্যখানে একটি ভাল্কহেডকে মঞ্চ বানিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্টান। দেশখ্যাত শিল্পী আশিক একের পর এক মরমি গানে মজিয়েছেন দর্শকদের। এই অঞ্চলের হৃদয় তোলপাড় করা মরমি গান গুলো পরিবেশন করছেন তিনি। তাছাড়া শাহনাজ ভেলিও গানে গানে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। একের পর এক মরমী গানে সুরে ইন্দ্রজাল তৈরি করেছেন তিনি। তাছাড়া স্থানীয় শিল্পী ঐষির কণ্ঠেও মুগ্ধ হন শ্রোতারা। গানের মজমায় সবাই জোছনাসুধায় মজেছেন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ শাহানা রব্বানী, সাবেক সাংসদ নজির হোসেন, পুলিশ সুপার মোহা. হারুন অর রশিদ, উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুলসহ স্থানীয় সুধীজন রয়েছেন।
এদিকে জোছনা উৎসব উদযাপনে হাওরের পরিবেশ ও প্রতিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করেছেন পরিবেশবাদীরা। তারা পরিবেশ ও প্রতিবেশ বজায় রেখে অনুষ্ঠান পালনের অনুরোধ জানিয়েছেন।