স্টাফ রিপোর্টার::
আবাসন প্রকল্পের প্রতারণার মামলায় সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনের বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর বুধবার দুপুরে সিলেটের সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে তিনি দোষ স্বীকার করে বাদীর অনুকুলে আদালতের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকার চেক দিয়েছেন। একই সঙ্গে জামিন আবেদন করলে আদালত চেক যাছাই করে তার জামিন মঞ্জুর করেন। আইনজ্ঞরা জানিয়েছেন বাদীর অনুকুলে টাকা দিয়ে মূলত বাদীর সঙ্গে প্রতারণার বিষয়টি তিনি স্বীকার করে নিজের দোষই স্বীকার করেছেন।
আবাসন ব্যবসার কথা বলে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করে ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাত করায় বাদী মাওলানা শাহীনুর পাশার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত এই পরোয়ানা জারি করেন। বুধবার বাদীর অনুকুলে ১০ লাখ টাকার চেক দিয়ে তিনি জামিন পান।
সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী ঢাকার বনানীর বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী তালুকদার একজন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। ১৩ ডিসেম্বর আদালতে তিনি প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন। বাদীর অভিযোগ, শাহীনুর পাশার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে তাঁর পরিচয় হয়। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাশে তাঁর ‘মাতৃভূমি হাউজিং ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’ এর নামে একটি আবাসন প্রকল্প আছে জানিয়ে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে মোহাম্মদ আলী তালুকদারকে প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হওয়ার প্রস্তাব দেন। মোহাম্মদ আলী ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর থেকে কয়েক দফায় ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু শাহীনুর পাশা তাঁকে না জানিয়ে একপর্যায়ে প্রকল্পটি বিক্রি করেন। এরপর থেকে বারবার যোগাযোগ করলে শাহীনুর টাকা দেননি। চলতি বছর শাহীনুর টাকা পরিশোধের জন্য ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের একটি চেকে পাঁচ লাখ টাকা দেন। একই ব্যাংকের ভিন্ন ভিন্ন তারিখে আরও তিনটি চেকসহ মোট ২০ লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু এসব চেক নগদায়নের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় জমা দিলে ডিজঅনার হয়। এরপর শাহীনুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি জানান, ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকার লভ্যাংশসহ ফেরত দেবেন। গত ২২ অক্টোবর শাহীনুর পাশা তাঁর পরিচিত এই মামলার সাক্ষীর উপস্থিতিতে পাওনা টাকার কথা অস্বীকার করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মামলা করেছেন। এভাবে প্রবাসীর কাছ থেকে আবাস ব্যবসার কথা বলে তিনি প্রতারণার মাধ্যমে তার কাছ থেকে ৩২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
সিলেট বারের বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোটে শহীদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আদালতে বাদীর অনুকুলে ১০ লাখ টাকা দিয়ে মূলত মামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দোষ স্বীকার করে নেওয়া হলো।