শামস শামীম ::
দিরাই-শাল্লায় বাঁধ নির্মাণে এবারো ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। গত বছর ভালো পরিবেশ ও উন্নত ব্যবস্থাপনার পরও সবচেয়ে কম কাজ হয়েছে এই দুটি উপজেলায়। নির্ধারিত ডিজাইনে কাজ না হওয়ায় শেষে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। যারা কাবিটা মনিটরিং ও বাস্তবায়ন কমিটিতে ছিলেন রাজনৈতিক দলের সেই নেতাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার সঙ্গে কাজের প্রতিও উদাসীনতা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে কাজ কম হওয়ায় এই দুটি উপজেলায় এবছর বেশি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দিরাই-শাল্লায় গত অর্থ বছরে ১৩৪টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য উপজেলায় কঠোর ব্যবস্থাপনায় কাজ শুরু হলেও এই দুটি উপজেলায় সেই সুযোগ ছিলনা। দুটি উপজেলার প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতারা বাঁধ নির্মাণে যুক্ত থাকায় শুরু থেকেই অনিয়ম, অব্যবস্থাপনাতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তারা। তাছাড়া তাদের মধ্যে সমন্বয়েরও অভাব ছিল। যে কারণে গড়ে জেলায় সবচেয়ে কম কাজ হয়েছিল এই দুটি উপজেলায়। অন্যান্য উপজেলায় ৯০ ভাগের মতো কাজ হলেও এই দুটি উপজেলায় গড়ে ৬০-৬৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। ফলে বাকি রয়ে গিয়েছিল বেশিরভাগ কাজ। যে কারণে এবছর এই দুটি উপজেলায় অন্যান্য উপজেলার চেয়ে বেশি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত। গত বছর এই দুই উপজেলায় কাজ কম থাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ফেরত গিয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর দিরাই উপজেলায় ১১০টি প্রকল্প এবং শাল্লা উপজেলায় ১১৪টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য উপজেলায় ইতোমধ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এই দুটি উপজেলায় এখনো একটি প্রকল্পই গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে এবারও কাজে ধীরগতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সাংবাদিক ও এক্টিভিস্ট আবু হানিফ চৌধুরী বলেন, আমাদের দুটি উপজেলায় গতবার কাজে নানা অনিয়মের সঙ্গে ধীরগতিও ছিল। এবারও পিআইসি গঠনের কোন খবর নেই। তাই এবারও গত বারের মতো কাজে বিলম্ব হবে বলে কৃষকরা আশঙ্কা করছেন।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ও কৃষক নেতা অমরচাঁদ দাশ বলেন, গত বছর আমি অনেক বাঁধে ঘুরেছি। কোন বাঁধের কাজই যথাসময়ে শেষ করা যায়নি। এবারও এখন পর্যন্ত কোন প্রকল্প কমিটি গঠিত হয়নি। গঠিত কমিটিতে তিনি কৃষকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভূইয়া বলেন, গতবার সবচেয়ে কাজ কম হয়েছে দিরাই-শাল্লায়। ফেরত গিয়েছিল দেড় কোটি টাকা। যে কারণে এবার সবচেয়ে বেশি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত একটি কমিটিও গঠিত হয়নি বলে জানান তিনি।