1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৮ অপরাহ্ন

অভিনন্দন মিনিস্টার এমএ মান্নান ।। শামস শামীম

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৯, ২.৩৯ এএম
  • ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

অভিনন্দন জনগণমন নন্দিত নেতা পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান। আপনার মন্ত্রীত্বের খবরে আনন্দে হাসছে হাওর-ভাটির মানুষ। জাতীয় উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা এই অঞ্চল এবার আপনার যোগ্য নেতৃত্বে উন্নয়নের মূল স্রোতে সমতা চায়। আপনার মাধ্যমে ন্যায্যতার হিস্যা বুঝে নিতে চাই আমরা। মাটিমূল মানুষের নেতা হিসেবে আমরা আপনাকে নিয়ে গর্ব করতে চাই। সদম্ভে হাঁটতে চাই উন্নয়নের মহাসড়কে।
২০০৫ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পানপাতা প্রতীকে উপ-নির্বাচন থেকেই সংবাদকর্মী হিসেবে আপনার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, সময়ে তা ঘনিষ্ঠতায় রূপ নিয়েছে। দিনে দিনে সখ্যতা, আন্তরিকতা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সেতু দীর্ঘ হয়েছে। আপনার শাণিত ব্যক্তিত্বে ঋদ্ধ হচ্ছি।
হাওর ভাটির এই সুসময়ে আজ একযুগ আগের স্মৃতি নাড়া দিচ্ছে। আপনার প্রথম নির্বাচনের সময় সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে বি.এ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলাম। পাশাপাশি কাজ করতাম ঐতিহ্যবাহী দেশের প্রাচীনতম জাতীয় দৈনিক সংবাদে। প্রথম পরিচয়েই আপনার দৃষ্টি কেড়েছিলাম-এই ঐতিহ্যবাহী ও প্রগতিশীল পত্রিকায় কাজ করার সুবাদে। প্রথম দিনই আপনি বলেছিলেন এই পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ূন ভাই আপনার বন্ধুজন। ওই সময় কাশেম হুমায়ূন ভাইও আপনার নির্বাচনী সংবাদ নিয়মিত পাঠানোর জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সংবাদে প্রতিদিনই সুনামগঞ্জ পৌর মার্কেটের রব্বানী ভাইয়ের ফোন-ফ্যাক্সের দোকান থেকে সংবাদ পাঠাতাম। আপনার নির্বাচনী সংবাদ পাঠাতে পাঠাতেই আমার সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। আপনি ব্যবস্থাপনা সস্পাদকের বন্ধু হওয়ার সুবাদে বার্তা বিভাগ আমার পাঠানো প্রতিটি সংবাদই ছাপতো গুরুত্ব দিয়ে। উপ-নির্বাচনে আপনার বিজয় যখন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল তখন কাশেম হুমায়ূন ভাই ও আমাদের সিলেট অফিসের ব্যুরো প্রধান আল আজাদ ভাই এ নিয়ে একটি বিশেষ সংবাদ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্বাচনের পরে আপনি সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করেও আপনার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। নানা তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরেছিলেন সাংবাদিকদের কাছে। আমি মানুষের সঙ্গে কথা বলে, বিভিন্ন কেন্দ্রের খবর নিয়ে আপনার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে পাঠিয়েছিলাম। পরদিন ওই রিপোর্ট আমার আর আল আজাদ ভাইয়ের নামে সংবাদের শেষ পৃষ্ঠায় ছাপা হয়েছিল। এই সংবাদের জের ধরে জেলা বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতা (জগন্নাথপুর নিবাসী) আমাকে ইমোশনাল থ্রেটও করেছিলেন। এবারো নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক প্রার্থী আপনার কুৎসা করে আমার বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়েছিলেন প্রকাশ্যে।

পানপাতা প্রতীকের নির্বাচনের পরই আপনিই হয়ে ওঠলেন ওই আসনে আওয়ামী লীগের ভরসা, আশা-প্রত্যাশার অবিসংবাদিত নেতায়। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আস্থার প্রতীক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে তার প্রত্যাশার স্ফূরণ ঘটিয়ে চলছেন। এতে আপনার প্রতি তার আস্থা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিকল্পিত উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন নিজ এলাকা। আপনার উন্নয়ন ছোয়ায় পুরো জেলায়ই পালের হাওয়া লেগেছে। বইছে পরিবর্তনের সুবাতাস। এবারও অবশেষে সেই আস্থা নিয়েই তিনি আপনাকে পূর্ণমন্ত্রী করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। আপনি আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরমে নিয়ে আসার পেছনে এবার নির্বাচনের আগে আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগের বৃহত্তর স্বার্থে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করে নৌকাকে বিজয়ী করতে ছুটে গিয়েছিলেন আপনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুস সামাদ আজাদের পুত্র আজিজুস সামাদ ডনের বাসভবনে। পুরো পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেছেন। এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে রাজনীতির মাঠে আপনার ভাবমূর্তি আরো প্রোজ্জ্বল হয়েছে। দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন আপনার মহানুভবতায়।
সততা, সংকল্প, দৃঢ়তা ও আদর্শের প্রশ্নে আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আস্থাভাজন নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন বহু আগেই। কর্মজীবনেই আপনি শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা, এলাকার উন্নয়ন এবং দেশের প্রকৃত সেবা করতেই উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল আ.লীগে যোগ দিয়েছিলেন। যে লক্ষ্যে যোগ দিয়েছিলেন সেটা যে সর্বার্থেই পূরণ হয়েছে পেছনের দিকে দৃষ্টি দিয়ে আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি। এবারের পূর্ণ মন্ত্রীত্ব আপনার অপূর্ণ আশা পূর্ণ হবে এই প্রত্যাশা করি। উন্নয়নের মহাসড়কে আপনাকে নিয়ে দ্রুতগামী অশ্বারোহী হতে চায় জেলাবাসী। নিজের ভূমিতে পা রেখে আমরা জাতীয় আকাশও ছুঁতে চাই স্পর্ধায়। হাওরের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে চাই আমরা।
আপনি প্রথাগত রাজনীতির বাইরের একজন সোজাসাপ্টা আপাদমস্তক প্রগতিকামী প্রাজ্ঞ ও মুক্তচিন্তক মানুষ। আপনার সঙ্গে সান্নিধ্যে গিয়ে গৌরবের এই পরিচয়টি পাবার পর আরো বেশি আস্থা ও শ্রদ্ধা জন্মেছে। নতুন করে নতুন পরিচয়ে একজন পূর্ণ আদর্শ মানুষ হিসেবে আপনাকে জেনেছি। আপনার সুদূরপ্রসারী চিন্তা ও প্রাজ্ঞতায় প্রতিদিনই মুগ্ধ হচ্ছি। বিশেষ করে তরুণদেরকে আলস্য ও কল্পনা বিলাসিতা ছেড়ে কর্মমুখর করতেই আপনার আগ্রহ বেশি। একজন বিজ্ঞানমনষ্ক ব্যক্তিত্ব হিসেবে আপনি আমাদের নমস্যজন।
এমপি-মন্ত্রী হয়ে অনেকেই বদলে যায়। নিকট অতীতে অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে এমন। আপনি ছিলেন তার উল্টো। আলিসান বাড়ি করেননি। নিজ এলাকায় আপনার দুটি সাদাসিধে বাড়িই জনগণের বাধাহীন বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছে বাড়ি দুটি ঐক্যবদ্ধ থাকার প্লাটফরমে রূপ নিয়েছে। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে দেখেছি আপনার নামে কোন সিন্ডিকেটও ছিলনা। নিজের স্বজনদের শুরু থেকেই দূরে রেখেছিলেন। তারাও কোনদিন আপনার পরিচয়ে কোন অফিসে দাপট দেখায়নি। এ কারণেই সাধারণ মানুষ আপনাকে ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে।
আপনার এলাকারসহ জেলার সরকারি চাকরিজীবীরাও আপনাকে আপনার সততা, আন্তরিকতা উদার ব্যবহারের কারণে অশেষ শ্রদ্ধা করেন। এই অনন্য গুণটি আপনার রয়েছে। নিজের নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংঘাতকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে গত ১০ বছর ধরে আপনি স্বস্তিতে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। যে কারণে নিজের আসনের সব মানুষই আপনার প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল।
আপনি আলস্য, কল্পনা বিলাসিতা পছন্দ করেন না। কর্মমুখর মানুষ আপনার ভালোলাগার মানুষ। দেশ ও মানুষের উন্নয়নে নানাভাবে যারা ভূমিকা রাখছেন তারা আপনার বিশেষ পছন্দের। এ কারণে দেশের বোঝা হিসেবে পরিচিত একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে নিয়ে আপনার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে।
রাজনীতিবিদরা যখন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বাগাড়ম্বর কথা বলেন আপনি তখন তার উল্টো অবস্থানে। অন্যরা যখন কানফাটা চিৎকারে বাগাড়ম্বর বক্তব্যে মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের ব্যর্থ চেষ্টা করে আপনি তার বিপরীতে গিয়ে গুছিয়ে আপনার পরিকল্পনা, বিশ্বাসের কথা বলেন। কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসের বদলে যুক্তি ও প্রশ্নের আলোয় প্রজন্মকে উদ্ভাসিত করতে চান। রাজনৈতিক কৌশলে নানা মোড়কে অবস্থান নিলেও আদর্শ ও বিশ্বাস ধারণ করেন অন্তরে।
গত ২৭ ডিসেম্বর আপনার নিজ এলাকা দক্ষিণ সুনামগঞ্জে নির্বাচনী শেষ সমাবেশে বক্তব্য শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। প্রায় তিরিশ মিনিটের বক্তব্যে সম্পদ, সম্ভাবনা ও বৈচিত্র্যে অনন্য হাওরের পরিকল্পিত উন্নয়ন, নারী শিক্ষা বিস্তারের উদ্যোগ, রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন, মানুষের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছিলেন। নির্বাচিত হলে হাওর ভাটির এই জনদাবিগুলো শেখ হাসিনার মাধ্যমে পূরণ করবেন এই আশ্বাস ছিল বক্তব্যে। ওই সভায় শেখ হাসিনাকে হাওরের পরীক্ষিত বন্ধু উল্লেখ করে হাওরের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী নিজেই আগ্রহী বলেছিলেন। পরদিন জগন্নাথপুরেও আপনি পরিকল্পিত বক্তব্য দিয়েছিলেন জনসমুদ্রে। সেখানেই আপনার বিশ্বাস ও স্বপ্নপূরণের অঙ্গীকার ছিল। জনগণ আপনার সততা, কর্ম ও আদর্শকে ভালোবেসে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে দেশ ও মানুষের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা আশাবাদী আপনি জনগণের দাবিগুলো পূরণ করবেন। আমাদের চাওয়া পাওয়ার মূল্যায়ন করে হাওর-ভাটিকে জাতীয় উন্নয়নের মূল স্রোতে নিয়ে যেতে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। নতুন উচ্চতায় আসীন হবে আমাদের হাওর ভাটি। আপনার দীর্ঘায়ু, সুস্থতা ও সফলতা কামনা করি। হাওরের সন্তান আপনি এগিয়ে যান সমূহ বাধা বিপত্তি পায়ে দলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!