হাওর ডেস্ক::
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘রাষ্ট্র একটি সামগ্রিক বিষয়। এখানে অনেক প্রক্রিয়া আছে। দেনদরবার আছে। তাদেরও সন্তুষ্ঠ করতে হবে। সেখানে কোনো অ্যাডভেঞ্চার করার বা রোমান্টিক আইডিয়ার সুযোগ নেই। বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়েই আমার কাজটা আমি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
আজ রবিবার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের বিশেষ আয়োজন ‘মিনিস্টার টকস’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উন্নয়নের গতি বাড়ানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ভয়ঙ্কর কোনো পরিবর্তন’ না এনে বর্তমান সিস্টেমকেই কাজে লাগিয়ে প্রবৃদ্ধিকে ১০ শতাংশ নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এজন্য, ছুটি কমানো ও কর্মঘণ্টা বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তা করতে হবে।’
নদীমাতৃক বাংলাদেশকে ‘সাঁকোবিহীন দেশ’ হিসেবে দেখতে চান উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি হয়েছে, তা ধরে রাখতে চাই।’
নতুন মন্ত্রী হিসেবে চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ হলো উন্নয়নমূলক কাজের গতি বাড়ানো। আমি নতুন করে ভয়ঙ্কর কোনো ধরনের পরিকল্পনা, সিস্টেম পরিবর্তনে যাবো না। আমার একমাত্র উদ্দেশ্য হবে, যে গতিতে আগের পরিকল্পনামন্ত্রী কাজটাকে এগিয়ে নিয়েছেন, সেই গতিটাকে ধরে কাজটাকে আরও একটু এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমলাতন্ত্রে কাজ করে আমার বিশ্বাস জন্মেছে যে, কাজের গতি বাড়ানো সম্ভব। অনেক স্তর আছে, যেগুলো দ্রুতই ঝেড়ে ফেলা উচিত। আইনগত কারণে আমরা তা পারছি না। যে বিধিবিধানগুলো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেগুলো কিন্তু একটি সুনির্দিষ্ট আইন। ওই আইন পরিবর্তন না করলে বিধিবিধানে হাত দিতে পারছি না।’
যেকোনো সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে শিফট করতে পারেন উল্লেখ পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটা জেনেই বলছি, দৈনন্দিন কাজটা যেন শেষ করতে পারি। আজকের কাজটা যেন আমি আজকেই করতে পারি। শুধু আমি নয়, আমার সঙ্গে যারা কাজ করবেন, যারা আছেন, তাদের কাছে আমি আবেদন করেছি, আহ্বান রেখেছি, নির্দেশনা দিয়েছি, গতি বাড়ান। এই গতি বাড়ানোই আমার অভিষ্ট লক্ষ্য, মূল লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘যে সিস্টেমের মাধ্যমে আমরা ৮ শতাংশের কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি, আমার ধারণা এই সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে ৯ বা সাড়ে ৯ এমনকি ১০ শতাংশেও নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’
সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের খরচ সম্পর্কে এম এ মান্নান বলেন, ‘কিছু অর্থ চুরি হয়ে যায়। আবার কিছু কিছু প্রকল্প আছে সেখানে কোনো খরচই হয় না। দুটিকেই এড্রেস করতে হবে। দুটিই অপচয়। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লে এগুলো কমে যাবে। কাজ না করলে সম্পদ সৃষ্টি হবে না।’
সুনামগঞ্জ জেলায় রেল লাইন স্থাপন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সুনামগঞ্জের ছাতক পর্যন্ত রেললাইন রয়েছে। এটাকে আর মাত্র ২২ কিলোমিটার বাড়ালে সুনামগঞ্জে রেললাইনের আওতায় আসবে। আমি কমিটেড এটা করতে। যদি সুনামগঞ্জে নিয়ে যাই, তাহলে পরবর্তী সময়ে এই রেললাইন মোহনগঞ্জেও নিয়ে যাব।’ এসময় তিনি সুনামগঞ্জ জেলার বিশাল হাওর এলাকায় জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করবেন বলেও উল্লেখ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ হল একটা মেগা ভিলেজ। অথবা বলা যায় বাংলাদেশ একটা বিশাল ভিলেজ টাউনের কাছাকাছি। গ্রাম অঞ্চলে এরই মধ্যে আমরা বিদ্যুৎ নিয়ে গেছি। আমাদের মহাপরিকল্পনা আছে। ডেল্টা প্ল্যান আছে। এর ভেতরে যে ছোট ছোট পরিকল্পনা আছে, তা ধরে এগিয়ে যেতে চাই। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ভেতরেই আমরা বার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে লক্ষ্য পূরণ করব। আবার এর ভেতরে এক বছরের পরিকল্পনা উন্নয়নেও কাজ করে যাব।’