স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ০ কি.মি. থেকে গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর। সড়কে জনপথ বিভাগের নির্মিত পরিদর্শন বাংলা, অফিস, বাসভবন, ওয়ার্কসপ, গ্যারেজসহ সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৩০০ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে পোস্ট অফিসে ডাক রেজিস্ট্রি করে এই আবেদন করেন মালেক হুসেন পীর। আবেদনের অনুলিপি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাহী প্রকৌশলী সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সুনামগঞ্জ পিটিআই সুপার বরাবরে দেওয়া হয়েছে।
মালেক হুসেন পীর তাঁর আবেদনে উল্লেখ করেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৬৮ কিলোমিটার মহাসড়কের দুই পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ শত শত অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠেছে। দখলদারগণ বিভিন্ন স্থানে পাকা, আধাপাকা, কাঁচা স্থাপনা তৈরি করে মহাসড়কে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। ওয়ান ইলেভেন সরকার মহাসড়কের কিছু কিছু জায়গা থেকে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও সেসব স্থাপনা গজিয়ে ওঠেছে। আবেদনকারী উল্লেখ করেন, সম্প্রতি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী দেশের সকল মহাসড়কের সরকারি ভূমিতে নির্মিত সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জনদুর্ভোগ লাঘব করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। এই সংবাদে তিনি উজ্জীবিত হয়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের এই আবেদন করেন। দ্রুত এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সুনামগঞ্জ সিলেট সড়কে প্রায় তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠেছে। এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা জরুরি। সুনামগঞ্জ পি.টি.আই এর সম্পূর্ণ সম্মুখভাগে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মহাসড়কের পাশে স্থাপনা গড়ে ওঠেছে পঁচাত্তরের পরে। সম্প্রতি সুনামগঞ্জ পি.টি.আইয়ের ভূমিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার নিদর্শন রক্ষার জন্য সরকারিভাবে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি টিনসেড পরিদর্শন বাংলা থাকায় বর্ণিত স্মৃতিসৌধ মহাসড়ক থেকে দৃষ্টিগোচর হবেনা বলে আবেদনকারী উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বশ্রেণির মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি বর্ণিত পরিদর্শন বাংলাটি বর্তমান স্থান হতে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আবেদনকারী উল্লেখ করেন, সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিস সংলগ্ন গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপে বেশ কিছুদিন পূর্বে এক বিধ্বংসী অগ্নিকা-ের সৃষ্টি হয়েছিল। আগুন নিভাতে গিয়ে সুনামগঞ্জ পৌরসভার প্রাক্তন দুইজন চেয়ারম্যান মনোয়ার বখত নেক ও মমিনুল মউজদীন অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হন। মনোয়ার বখত নেক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। বর্ণিত স্থাপনা সমূহের নিকটবর্তী জনবসতি থাকায় এই স্থাপনা নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর বলে আবেদনকারী উল্লেখ করেছেন। এভাবে অন্যান্য অবৈধ স্থাপনাগুলোও নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলছে।
মালেক হুসেন পীর বলেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের দুই দিকেই অনেক অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠেছে। বিভিন্ন সময়ে এসব স্থাপনা মানুষের দুর্ভোগ ও অসুবিধার কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে। সময়ের প্রয়োজনেই এগুলো উচ্ছেদ জরুরি। আমি মন্ত্রী বরাবর এসব স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে লিখিত আবেদন করেছি। ব্যবস্থা না নেওয়া হলে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেব।