বিশেষ প্রতিনিধি::
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান শেখ হাসিনাকে বিশ্ববাঙ্গালির একক নেতা ও হাওরবান্ধব নেত্রী উল্লেখ করে বলেছেন, আমি যতবার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছি ততবারই তিনি সুনামগঞ্জের খবর জানতে চেয়েছেন। সুনামগঞ্জের হাওরের ধানের খবর নিয়েছেন। ফসলি মওসুমে আকাশের অবস্থা কেমন, শিলাবৃষ্টি হয়েছে কি না, সার সরবরাহ হয়েছে কি না জানতে চেয়েছেন। কেন আমরা হাওরের এত জমি পতিত রাখি, আমাদের লন্ডনীরা কেন এত জমি পতিত রাখেন কারণ জানতে চেয়ে হাওরের জমিতে উৎপাদনের জন্য প্রকল্প নেওয়ার নির্দেশনা দেন। তিনি সবসময়ই আমাদেরকে হাওরের জন্য কাজ করতে বলেন। মন্ত্রী এমএ মান্নান আরো বলেন, আমি যতবার হাওরাঞ্চলের মানুষের জন্য প্রকল্প নিয়ে গেছি ততবারই অনেকের প্রশ্ন থাকা সত্বেও তিনি হাসিমুখে প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। তার সকল ¯েœহ হাওরের খেটেখাওয়া, নির্যাতিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত অসহায় মানুষের জন্য। হাওর অঞ্চল, চরাঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চল, উপকূলীয় অঞ্চল, যমুনার চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন্য। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নেতৃত্বগুণে, প্রজ্ঞায় দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এখন বিশ্বনেত্রী হিসেবে পরিচিত। তিনি সারাবিশ্বের বাঙ্গালিদের একক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তাই আমাদের উচিত এই অভিজ্ঞ ও সাহসী নেতৃত্বকে শক্তি ও সমর্থন দেওয়া। তিনি বলেন, আমাদের গত সরকারের সময় প্রথানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছিলেন আমরা আবার সরকারে এলে সুনামগঞ্জে বিজ্ঝান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে।
বুধবার বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা যুবলীগ আয়োজিত সংবর্ধনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনাসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট বেলাল হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক, ঢাকাস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির সভাপতি আকবর হোসেন মঞ্জু, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা পীর মতিউর রহমান, আসাদুজ্জামান সেন্টু, খন্দকার মঞ্জুর আহমদ, সবুজ কান্তি দাস, রনজিত চৌধুরী রাজন প্রমুখ।
মন্ত্রী এমএ মান্নান মেডিকেল কলেজ অনুমোদনে শেখ হাসিনার সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এবারের জাতীয় নির্বাচনের আগে শেষ একনেক সভার আগের সভায় আমি যখন সাহস করে সুনামগঞ্জের মেডিকেল কলেজের প্রস্তাব নিয়ে নেত্রীর কাছে যাই তখন পরিচিত অনেকেই বলেছিলেন পাশের সিলেট, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ থাতকে সুনামগঞ্জে আবার মেডিকলে কলেজ কেন। তারা প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীতো এসব অনুমোদন দিবেন না। কিন্তু সবার ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে হাওরবান্ধব নেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে মেডিকেল কলেজ অনুমোদন দিয়েছেন। আমি তখন তাকে বলেছিলাম নেত্রী আমার হাওরের জন্য একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিতে হবে। তিনি আমাকে কথা দিয়েছেন আগামী সরকারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দিবেন। আমরা তার নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছি। নিশ্চয়ই আমরা শিঘ্রই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও অনুমোদন করিয়ে নিয়ে আসব।
মন্ত্রীপরিষদের প্রথম সভায় শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের হুসিয়ারি করে বলেছেন, আমরা সবাই জনগণের নজরদারিতে আছি। আপনারা সকল মন্ত্রীরাও আমার নজরদারিতে আছেন। তিনি বলেন, নেত্রী আমাদের বলেছেন বাংলার মানুষ আমাদের ভালোবেসেছে। তারা পদে পদে আমাদের নজরদারিতে রেখেছে। তাই নেত্রী আমাদের সকল মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন দেশপ্রেমের সঙ্গে, সততার সঙ্গে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য পরিশ্রম করতে হবে। তিনি আমাদেরকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, সাধারণ জনগণ আমাদের সকল কাজ পদে পদে প্রত্যক্ষ করছেন। তাই আমরাও অঙ্গিকার করছি জনগণের কাছে মাথা নত করে আমরা সততার সঙ্গে কাজ করে যাব।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীন বাংলা ও স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের শ্রষ্টা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণে দুটি শব্দ বলেছিলেন ‘স্বাধীনতা ও মুক্তি’। ‘স্বাধীনতা’ হলো আমাদের রাজনৈতিক-আনুভৌমিক আর মুক্তি হলো আমাদের আর্তসামাজিক। সুদূরপ্রসারী এই ভাষণ আমরা প্রথমে অনুধাবন করতে পারিনি। আমরা এখন জাতির জনকের সেই মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছি। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরে দেশের উন্নতি ও প্রগতির চাকা ঘুরাচ্ছিলেন। কিন্তু পচাত্তরে দেশবিরোধী শক্তি তাকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করে সেই চাকা থামিয়ে দিয়েছিল। ১৯৯৬ সনে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই চাকা আবার চালু হয়েছিল। ২০০১ সালে অন্যদেশের মুখাপেক্ষি পরাধীন শক্তি আবারও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সেই গতি থেকে আমাদের বিতারণ করেছিল। জনগণ আবার আমাদের সেই চাকা প্রগতির পথে চালিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের বাঙ্গালি জাতিকে বিশ্বমানের জাতির মর্যাদা দিতে চান। তিনি অন্যান্য উন্নত বিশ্বের অগ্রসর জাতির মতো চিন্তা, চেতনা, জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রগতিতে পৌঁছাতে চান। তিনি বলেন, এখন আমাদের অভিজ্ঞ নেতৃত্বে আছেন শেখ হাসিনা। তিনি খেটে খাওয়া, নিপীড়িত, নির্যাতিত, নি¤œআয়ের, পরিশ্রমী ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষকে ভালোবাসেন। এই মানুষগুলোই তার অতি আপন। তাই আমাদের উচিত তাকে সাহস, সমর্থন ও শক্তি দেওয়া।