ছাত্র ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা সংসদের উদ্যোগে সর্বস্তরে মাতৃভাষার প্রচলন
এবং আদিবাসীদের নিজস্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে
মানববন্ধন ও শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে বানান শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করে। মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়রি) সকাল সাড়ে ১১ টায় আলফাত উদ্দিন চত্তরে ( টাফিক
পয়েন্ট)ছাত্র ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা সংসদের উদ্যোগে উক্ত কর্মসূচী অনুষ্ঠিত করে।
মানববন্ধন পরবর্তী ষোলো দিন ব্যাপি বানান শুদ্ধি অভিযান উদ্ভোধন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি কমরেড চিত্ত
রঞ্জন তালুকদার। জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দুর্যোধন দাস দুর্জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ
সম্পাদক আসাদ মনি’র সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিপিবি,জেলা শাখার সভাপতি কমরেড চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের
সাংগঠনিক সম্পাদক পাপ্পু সরকার, সহ-সভাপতি বিমান দাস রাজীব, কলেজ সংসদের সভাপতি মনির হোসেন দূর্জয়, সাধারণ সম্পাদক নিমাই সরকার, শহর সংসদের
সভাপতি গৌতম দাস প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন,শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক সানন্দ বর্মণ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাফিয়া
খাতুন, শহর সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আদনান হাবিব রাব্বি সহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ।
কমরেড চিত্ত রঞ্জন তালুকদার তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর পেরিয়ে গেছে ৬৭ বছর। সাড়ে ছয় দশকেও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি
ভাষা আন্দোলনের। ফলে ভাষা আন্দোলনের আজ একে একে ৬৭টি বছর অতিবাহিত হলেও বাংলা ভাষার যথাযথ প্রয়োগে মজবুত কোনো ভিত্তি গড়ে তোলা হয়নি। সর্বস্তরে
বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ প্রশাসন, রাষ্ট্র পরিচালনা, শিক্ষা-প্রযুক্তির প্রসার, ভাষার উন্নয়ন আর পাহাড়িদের ভাষার অধিকার ও
মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে তেমন কোনো প্রদক্ষেপ স্বাধীনতার পরবর্তী কোনো সরকারের আমলনামায় নেই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে দেখা যায় বানান
ভূলের ছড়াছড়ি।
তিনি আরো বলেন শহরস্থ সকল প্রতিষ্ঠানের নামের অশুদ্ধ বানান শুদ্ধ করে
একুশের শহিদদের রক্তের ঋন শোধ করতে ছাত্র ইউনিয়নকে দায়িত্ব নিতে হবে। যেসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো শহিদ মিনার স্থাপত করা হয়নি সেসকল
প্রতিষ্ঠানে দ্রুত সময়ের মধ্যে শহিদ মিনার স্থাপনের দাবি জানান।
জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দুর্যোধন দাস দুর্জয় বলেন, সারা পৃথিবীর
চারশ সতেরো টি ভাষার মধ্যে জাতিসংঘ বাংলাকে তৃতীয় স্থানে রেখেছে। প্রায় ছত্রিশ কোটি মানুষ প্রতিদিন বাংলা ভাষা উচ্চারন করে, কথা বলে। সাহিত্যের
ক্ষেত্রে মানুষ যে ভাষা সবচেয়ে বেশি শিখতে চায় সেখানে বাংলা ভাষার স্থান দ্বিতীয়। এসময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, গোঠা ভারত বর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে মন্ত্র
দিয়েছিলেন যিনি, সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যাযয়ের বন্দে মাতরম, সেই সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যাযয়ের ভাষা হলো
বাংলা। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের ভাষা বাংলা। স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ আরো অনেক গুণিব্যাক্তিগণের ভাষা হলো বাংলা।
মানববন্ধনে, অবিলম্বে সর্বস্তরে মাতৃভাষার প্রচলন এবং আদিবাসীদের নিজস্ব
মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার দাবী জানা তারা। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ষোলো দিন শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বানান শুদ্ধি অভিযান করবেন বলে ঘোষনা দেন।