জগন্নাথপুর প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ধানরক্ষা রেড়িবাঁধের ৫০টি প্রকল্পের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হয়নি। ফলে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠ বিরাজ করছি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ সমাপ্তির সময়সীমা পার হওয়ার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সস্পন্ন হয়নি বাঁধগুলোর কাজ। গতকাল হাওরের ফসলরক্ষা পর্ষবেক্ষণ উপজেলা কমিটি ও কৃষকদের নিয়ে কাজ করা সামাজিক সংগঠন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের নেতারা জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওর সুরাইয়া বিবিয়ানা হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১০ টি প্রকল্প চিহ্নিত করে দ্রুত এসব প্রকল্পের কাজ ঝুঁকিমুক্ত করতে প্রকল্পের সভাপতিদের নির্দেশ দেন। ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পগুলো হচ্ছে নলুয়ার হাওরে ৭,৮, ১০, ১১, ১৫,১৭,১৯ ২০,৪৭ ও ৫০ নম্বর প্রকল্পটি।
হাওরের ফসলরক্ষা পর্যবেক্ষন উপজেলা কমিটির সভাপতি জগন্নাথপুরের ইউএনও মাহফুজুল আলম বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলায় এবার ৫০ টি প্রকল্পের মাধ্যমে হাওরের ফসলরক্ষাার কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে ৪০টি প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অবশিষ্ট ১০টি প্রকল্প নদী তীরবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ন রয়েছে। আমরা প্রকল্পের সভাপতিদের মাধ্যমে সেগুলো ঝুঁকিমুক্ত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি ১৫ মার্চের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হবে।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু করে ২৮ ফেরুয়ারি শেষ করার কথা। কিন্তু প্রতিবছর কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়। এবারো এক মাস পিছিয়ে কাজ শুরু করায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। ফলে আমরা চিন্তিত।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, জগন্নাথপুর উপজেলায় এবার বোরো ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধের আওতায় ৫০ টি প্রকল্পে ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যায়ে ৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার করা হচ্ছে। এরমধ্যে নলুয়ার হাওরের ১০টি প্রকল্প ঝুঁকিতে রয়েছে। ওইসব প্রকল্পের কাজও শেষ হয়নি এখন পর্যন্ত।
৮ নং প্রকল্পের সভাপতি আবুল কয়েছ বলেন, আমার প্রকল্পের ঘাস লাগানো ব্যতিত সব কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের ২০০ মিটার অংশ খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এ অংশে বাঁশ বস্তা প্রাক্কলনে না থাকায় অংশটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমরা বার বার আবেদন করলেও পাউবো কোন পদক্ষেপ নেয়নি। একই হাওরের ১৫ নং প্রকল্পের আরেক সভাপতি চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের জুয়েল মিয়া বলেন,আমার প্রকল্পটি নদী তীরবর্তী হওয়ায় এমনিতেই ঝু্কপিূর্ণ। আমি প্রক্কলন অনুযায়ী কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ না হওয়ায় আরো ১৫ দিন সময় বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি বদ্ধিত সময়ের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হবে। যেসব প্রকল্প ঝু্কপিূর্ণ রয়েছে সেগুলো ঝুঁকিমুক্ত করতে বাঁশ বস্তাসহ বিভিন্ন কাজ করে প্রাক্কলন অনুযায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।