হাওর ডেস্ক::
বীরাঙ্গনাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর এবার তাঁদের রাস্তাঘাটে গালাগাল, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শাল্লা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন একজন বীরাঙ্গনা।
সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় গ্রেপ্তার কয়েকজনের স্বজনদের নাম উল্লেখ করে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাল্লা উপজেলার উজানগাঁও গ্রামের তিন বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগম, জমিলা খাতুন ও মুক্তাবান বিবি স্বীকৃতি পাওয়ার পরই প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন মহল তাঁদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে। তাঁদের অভাব অভিযোগ লাঘবসহ সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছে। এই বীরাঙ্গনারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা কয়েকটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এসব কারণে ক্ষুব্ধ অভিযুক্তদের স্বজনরা। সম্প্রতি অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
গত শনিবার বীরাঙ্গনাদের সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগের দুটি পক্ষ বিরোধে জড়ায়। এর জের ধরে একটি পক্ষ ওই দিন রাতে বিক্ষোভ করে। ওই মিছিলে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার জলিল মিয়ার ছেলে সুয়েব মিয়া, গোলাপ মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া, শুকুর মিয়ার ছেলে জালাল উদ্দিন ও তাঁর ছেলে সুমন, আব্দুল হেকিমসহ কয়েকজন বীরাঙ্গনাদের এলাকা ছাড়ার হুমকি-ধমকি দিয়ে স্লোগান ও বক্তব্য দেন।
কালের কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় গত রবিবার এ ঘটনার সংবাদ ছাপা হওয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কর্মীরা খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ওই দিন রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভিতে খবরটি নিয়ে টক শো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার দিরাই ও শাল্লা থানার ওসি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। বীরাঙ্গনারা তাঁদের হুমকি-ধমকির বিষয়টি জানান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বীরাঙ্গনা জমিলা খাতুন ও বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগম শাল্লা থানায় গিয়ে মামুন, হেকিম, জালাল মেম্বার, ইউনুছ, ছালেকসহ সাত-আটজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
মোবাইল ফোনে জমিলা খাতুন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘তাঁদের হুমকি-ধমকিতে আমরা তটস্থ। রাস্তাঘাটে বের হলেই আমাদের গালাগাল করে, কিভাবে এলাকায় থাকি, তা দেখে নেওয়ার হুমকি-ধমকি দেয়। ’
শাল্লা থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’