স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে নানা ধরনের নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে সকলের অগোচরে নিম্মমানের ‘আজিজ’ ইট ব্যবহার করতে কমপ্লেক্স চত্বরে নিয়ে আসে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘বেস্ট প্রকৌশলী শেখ হেমায়েত আলী আনোয়ারা এন্টারপ্রাইজ’ এর সংশ্লিষ্টরা। এই খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ঘটনাস্থলে গিয়ে নি¤œমানের ইট ব্যবহার না করতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি ফোনে অবগত করেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের তাৎক্ষণিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনসহ কর্মকর্তারা সরেজমিন ছুটে আসেন। এই সময় প্রকৌশলীরা নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হয়ে কথা বললে মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভের মুখে উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন সংশ্লিষ্টদের নিম্মমানের ইট ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
জানা গেছে প্রায় একমাস আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণকাজ পরিদর্শনে আসেন। এসময় তিনি বেইজড ঢালাইয়ের পর বালু ফিলিং করার নির্দেশনা দেন। কিন্তু সরেজমিন শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায় ঠিকাদারের লোকজন বালুর বদলে মাটি ফেলছে। এই সময় তড়িগড়ি করে তিন নম্বর গুণাগুণ সম্পন্ন নি¤œমানের অখ্যাত কম্পানির ইটও নিয়ে আসে। এ ঘটনা মুক্তিযোদ্ধাদের কানে গেলে সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্য সচিব মালেক হুসেন পীর ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল মজিদসহ মুক্তিযোদ্ধারা নি¤œমানের ইট ব্যবহার না করার আহ্বান জানান। এই সময় বেইজডলাইয়েও মাটি না ফেলার আহ্বান জানান। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন তাদের বাধা না মেনেই মাটি ফেলতে থাকে। বিকেলে উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভের মুখে তারা নি¤œমানের ইট ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন ঠিকাদারের লোকদের।
জানা গেছে গত ২৪ জানুয়ারি পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ তিনতলা বিশিষ্ট এই কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর করেন। তবে ইতোমধ্যে কাজের মেয়াদ চলে গেছে। বিলম্বে কাজ শুরুর কারণে সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১ কোটি ৮৭ লক্ষ ৩২ হাজার ৮৬১ টাকা।
ঠিকাদার মো. মাইনুদ্দিন বলেন, আমি কোন নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করিনা। তবে কাজ যেহেতু বিরাট সেহেতু কিছু মাল এদিক সেদিক হতে পারে।
মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর বলেন, বালুর বদলে মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটও নিয়ে আসা হয়েছে নি¤œমানের। ইটগুলো দেখলেই বুঝা যায় কোন গুণাগুণ নেই। আমরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে এসব ব্যবহার না করতে আহ্বান জানাই। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের বিষয়টি অবগত করি।
সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা এই ইট ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। এর বদলে ভালো ইট ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া ভিটে তিনফুট বালু দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তাছাড়া এটি মডেল কমপ্লেক্স হবে।