বিশেষ প্রতিনিধি::
ক্ষমতাধর বা ক্ষমতা ঘনিষ্ট বিশিষ্ট মানুষজন থানায় গেলে সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অন্যান্য অধস্থন কর্মকর্তা সাধারণত উন্নত ব্রান্ডের সিগারেট দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করেন। অনেক চতুর মানুষ আবার স্বার্থ হাসিলের জন্য পুলিশকে সিগারেট উপঢৌকন দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন সময় ওসির টেবিলে নানা ধরনের সিগারেটের প্যাকেটও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। থানা ক্যাম্পাসের চিরচেনা সেই চিত্রের ঠিক বিপরিত অবস্থা বিরাজ করছে সুনামগঞ্জ সদর থানায়। এই থানার সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সহ থানায় কর্মরত ৯ জন এসআই এর কেউ ধমুপানের সঙ্গে যুক্ত নয়। কোন ধরনের ধুমপানে আসক্তি নেই তাদের। এই অধুমপায়ী পুলিশ অফিসারদের কল্যাণে সুনামগঞ্জ সদর থানা ক্যাম্পাস সম্প্রতি ধুমপানমুক্ত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাছাড়া সেবার মানও আগের তুলনায় বেড়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
জানা গেছে সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ একজন স্পোটর্সম্যান ও অধুমপায়ী। নিয়মিত তিনি শারিরিক কসরত করেন। কোন ধরনের ধুমপানেই তাঁর আসক্তি নেই। তার কক্ষটি ধুমপানমুক্ত হিসেবে পরিচিত। একইভাবে থানার ভারপ্রাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. মাসুক আলীও একজন অধুমপায়ী ও দায়িত্বশীল অফিসার। ব্যক্তিগত জীবনে নিয়মনিষ্ট এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্ব নিয়ে আসার পর সদর থানা অধুমপায়ীদের থানা হিসেবে পরিচিতি পায়।
জানা গেছে সদর থানায় আরো ৯ জন এসআই কর্মরত আছেন। দুই উর্ধতন কর্মকর্তার পাশাপাশি থানার এসআই মো. মমিনুল ইসলাম,পবিত্র কুমার সিনহা, রিপন চন্দ্র গোপ, প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, মোশারফ হোসেন, মাহবুব আলম, সাইদুজ্জামান, সিবলি কায়েছ মির ও মো. রফিক উল্লাহও অধুমপায়ী। কোন ধরনের ধুমপানে এই পুলিশ কর্মকর্তাদের আসক্তি নেই। তাছাড়া এএসআইদের অনেকও ধুমপান করেননা বলে জানা গেছে।
থানায় কর্মরত ওসি ও এসআইবৃন্দ ধুমপান মুক্ত থাকায় থানার পরিবেশটাই এখন অন্যরকম বলে জানান সেবা নিতে আসা লোকজন। তারা এই পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান। থানায় সেবা নিতে আসা নাগরিকরা জানান, থানা ক্যাম্পাস ধুমপানমুক্ত থাকায় অধুমপায়ীরা থানায় সাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারেন। ধুমপানজনিত বিরক্তিকর ধোয়া সইতে হয়না তাদেরকে। ফলে থানা ক্যাম্পাসে পরিবেশ সম্মত অবস্থা বিরাজ করে।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. মাসুক আলী বলেন, আমি এবং ওসি সাহেবসহ আমাদের থানায় কর্মরত ৯ এসআইয়ের সবাই অধুমপায়ী। থানায় ধুমপানের কোন চিহ্ন নেই। ধুমপানে আসক্তি না থাকায় সুন্দর পরিবেশে আমার সবাই সাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়েও আমরা কাজে বিশেষ গতি পেয়ে থাকি। তাছাড়া এই বদ অভ্যাসে আসক্তি না থাকায় আমরা ধুমপান জনিত রোগবালাই থেকে দূরে আছি।
সদর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশিধ চৌধুরী বলেন, আমাদের থানার সকল কর্মকর্তা ও অন্যান্য দায়িত্বশীল স্টাফরাও অধুমপায়ী। আমরা সবাই মিলে-মিশেই থানায় এই পরিবেশ বিরাজে কাজ করছি। ধুমপানে আসক্তি না থাকায় আমরা কাজে-কর্মে বল পেয়ে থাকি। তাছাড়া রোগ বালাই থেকেও দূরে আছি।