বিশেষ প্রতিনিধি, তাহিরপুর::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের ওপার থেকে লোকালয়ে আসা অজগর সাপ জীবিত ধরে সেটিকে পিটিয়ে হত্যার পর সেই মৃত অজগর সাপ বিক্রির টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একদল গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে।
বুধবার সন্ধায় মৃত অজগরটিকে ভারতীয় নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠীর লোকজনের নিকট গোপনে কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি করারও অভিযোগ করলেন উপজেলার সীমান্তবর্তী বীরেন্দ্রনগর ও সুন্দরবন গ্রামের বেশ কিছু লোকজন।,
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানান, তাহিরপুরের শ্রীপুর উওর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী সুন্দরবন গ্রামে ওপারের ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে খাদ্যের সন্ধানে আসা একটি অজগর সাপকে প্রথমে বুধবার দুপুরে গ্রামের একদল লোক কৌশলে জীবিত অবস্থায় ধরে ফেলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অজরগরটি লম্বায় প্রায় সাড়ে ২২ ফুট (১৫ হাত) ওজনে প্রায় সোয়া ১ (৫০ কেজি) মণ হবে।
পরবর্তীতে বন বিভাগ কিংবা সীমান্তরক্ষায় নিয়োজিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবিকে না জানিয়ে ওই গ্রামের সাপ ধরার নেতৃত্বে থাকা বুডো খার ছেলে হাছেন খা ও একই গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে আজিজুল লোকজনকে অজগরটিকে বেঁধে রেখে পিটিয়ে হত্যা করে।
এক পর্যায়ে আজিজুল ও হাছেন খা মৃত সীমান্তের ওপারে থাকা ভারতীয় নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠীর লোকজনকে খবর দিয়ে নিয়ে এসে ওইদিন সন্ধায় কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়ে নিজেদের মধ্যে ওই টাকা ভাগ বাটোয়ারাও করে নেন।
বৃহস্পতিবার উপজেলার সুন্দরবন গ্রামের আজিজুলের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সহ গ্রামের বেশ কয়েকজন মিলে জীবিত অবস্থায় অজগর সাপটিকে আটক করার কথা স্বীকার করে জানান, পরে আমরা সাপটিকে পিটিয়ে মেরেছি। সাপ বিক্রির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারতের গারো সম্প্রদায়ের লোকজন এসে খাওয়ার জন্য মৃত অজগরটিকে নিয়ে গেছেন আমরা কোন টাকা রাখিনি।
বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ বন বিভাগের তাহিরপুরের ধলইরগাঁও বিট কর্মকর্তা বীরেন্দ্র কিশোর রায় জানান, খবর পেয়ে অজরগরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার জন্য বিট অফিস থেকে লোককে পাঠালে গ্রামের কয়েকজন লোক জানান সাপটিকে পিটিয়ে মারার পর নাকী ভারতীয় গারো সম্প্রদায়ের লোকজনকে খাওয়ার জন্য দিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, যে বা যারাই অজরটিকে জীবিত ধরার পর ফের পিটিয়ে মেরে এটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্তি একটি কাজই করেছেন, যা বন্যপ্রাণী পাচারযোগ্য অপরাদের শামিল বলেই বিবেচিত হবে।,