।। মোবারক হোসেন রুবেল।।
সদ্য একটা সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ পেয়েছি। কাজ বলতে কিছুই নাই। ৯ টা- ৫টা অফিস করি। সৈয়দ মুজতবা আলীর বিখ্যাত গল্প ”কাবুলের আবুল” এর মতো ঘন্টায় ঘন্টায় চুক চুক করে চা খাই। টিভি দেখি, পত্রিকা মুখস্ত করি। নেই কাজ অথচ খই ভাজার কোন সিস্টেম না থাকায় পত্রিকা মুখস্ত করি।
অনেকটা মাস হয়ে গেল। পত্রিকা পড়ি না, টিভি দেখি না, অনলাইনে আসি না। বলা যায় বাইরের জগৎ থেকে অনেকটা দূরে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। টিভি বলেন আর পত্রিকা বলেন রিমোট বাটন ক্লিক করলেই মারামারি, কিলাকিলি, বোমাবাজি…এসব নৃসংশতা দেখতে শক্ত হার্ট দরকার। আমার তা নেই।
ভাবলাম অলস সময়টা কিভাবে কাটানো যায়। নেশা করা দরকার। পুরনো নেশা। বই পড়া।
কয়েকটা বই কিনলাম। টানা ৮/৯ ঘন্টা বইয়ে মুখ বুঝে থাকাটাও একঘেয়েমি লাগে, কলিগেরা চশমার ফাক দিয়ে কি যেন দেখেন আর কানাকানি করেন!! আমি ব্যাপারটা এনজয় করি। তারপর আবার ঘুরে ফিরে টেবিলে পরে থাকা অসহায় পত্রিকায় ফিরে যেতে হয়।
খাদিজা নামটা শুনেছিলাম বন্ধুদের আড্ডায়। বন্ধুরা অনুরোধ করেছিলেন অন্তত একবার হলেও যেন ভিডিওটা দেখি। অবশেষে তিনবার সুরা ফাতিহা পাঠ করে বুকে ফু দিয়ে বদরুলের নৃশংসতার ভিডিও চিত্রটা দেখলাম।
ওরে বাপরে!!! একটা মানুষ (!!) পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট হতে পারে তা আমার জানা ছিলনা। আজকের পত্রিকায় দেখলাম, খাদিজা বেঁচে আছেন। বাম পাশ অবশ কিন্তু ডান হাত পা কিছুটা সচল। ডাক্তাররা বলতে এখনো ব্যর্থ খাদিজা বাঁচবেন কি না।
বদরুল সম্পর্কে যতটুকু জানলাম। সত্য মিথ্যা যাচাই করার মতো ব্যতি ব্যস্থতার প্রয়াস হয়নি। মেয়েটার সাথে তার দীর্ঘ ৬ বছরের প্রণয় ছিল। এক পর্যায়ে খাদিজা তাকে এভয়েড করে। একটা মেয়ে একটা ছেলেকে ভালো লাগে না। তাকে এভয়েড করাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে পাবলিক প্লেসে তাকে এভাবে খুন করাটা বদরুলের কোনভাবেই উচিত হয়নি।
জেনেছি বদরুলের মামলাটা দ্রুত বিচারের আওতাধীন হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই বদরুল তার প্রাপ্য কৃত কর্মের সাজা পাবেই।
অনলাইন জগতের বন্ধু বান্ধব কেমন আছে তাও জানিনা। হয়তো আমাকে ভুলেই গেছি। আমি কিন্তু ভুলি নাই।
সবার সাথে আছি। অনলাইনে আবার নিয়মিত হবার চেষ্টা করবো।
লেখক: অনলাইন এক্টিভিস্ট।