সাইফ উল্লাহ::
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের ঝুনু মিয়া হাইস্কুলের শিক্ষককে স্কুৃলের দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৬ মাসের কারাদ- দেওয়া হয়েছে। যৌন হয়রানীর শিকার ওই মেধাবী ছাত্রটি আদালতে হাজির হয়ে সকলের সামনে লম্পট শিক্ষকের কর্মকা- উপস্থাপন করলে আদালত মঙ্গলবার দুপুরে লম্পট শিক্ষককে ৬ মাসের কারাদ- প্রদান করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন। এর আগে ওই ছাত্রী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বরাবর লিখিত আবেদন করেছিল। কারাদ-প্রাপ্ত শিক্ষক হলো মোস্তফা রকিব ভুঁইয়া। সে জামালগঞ্জের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নিজ নামে নিজ গ্রাম লক্ষীপুরে প্রতিষ্ঠিত আলহাজ্ব ঝুনু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক ও পার্শ্ববর্তী ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের রিয়াজ আহমদের ছেলে। রায়ের সময় উপজেলা চেয়ারম্যান আদালতের সামনে উপস্থিত থাকলেও রায় না মেনে বেরিয়ে আসেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন।
জানা গেছে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঝুনু মিয়া কর্তৃক প্রতিষ্টিত উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক মোস্তফা রকিব ভূঁইয়া একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ফাস্ট গার্ল হতদরিদ্র মেধাবী ছাত্রীকে ক্লাসের ছুতোয় দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি করে আসছেন বলে ওই ছাত্রী পরিবারের কাছে অভিযোগ করে। সে তার হোমওয়ার্কের খাতা ও পরীক্ষার খাতায়ও আজেবাজে মন্তব্য করে অনেক কুপ্রস্থাব দেয়। ওই ছাত্রী তার চাচাকে জানালে চাচাকে শিক্ষকের লোকজন মারধর করে। অবশেষে অতীষ্ট ছাত্রী গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট যৌন হয়রানীর অভিযোগ করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোমবার রাতে বিদ্যালয়ের একটি আবাসিক রুমে থাকা কক্ষ থেকে থানা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার দুপুরে স্বাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়ে ওই শিক্ষককে ৬ মাসের কারাদ- প্রদান করেন।
অভিযোগ রয়েছে সহকারী শিক্ষক মোস্তফা এতিম ওই মেধাবী ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরেই যৌন হয়রানি করে আসছিলো। লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার আংশকায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি সে। কিন্তু ওই শিক্ষকের কু-নজরের মাত্রা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেতে থাকে। একপর্যায়ে এসএসসির প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষায় অংশ নেয়া ওই ছাত্রী আপক্তিকর প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালীন অহেতুক ওই শিক্ষক তার খাতায় ক্রস চিহ্ন এঁকে দেন। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে অবহিত করা হলে তিনি শুক্রবার বিকালে স্কুল মাঠে এ নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষকের লোকজন ছাত্রীর চাচা আশরাফ হোসেন রুপনকে মারধর করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাসলিমা আহমেদ পলি বলেন, ওই স্কুল ছাত্রী কতৃক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানীর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।