রেজাউল আলম নিক্কু::
সিলেট হতে সুনামগন্জ্ঞ এই দীর্ঘ পথের অধিকাংশ রাস্তা ছিল উভয় পাশে ঢিভির মত উঁচু এবং মধ্য দিয়ে চলতো ৪৪ মডেলের সার্ভোলেট গাড়ী। পথের বিভিন্ন স্হানে বাজারে ষ্টান্ড থাকলেও পথিমধ্যে বিভিন্ন স্হানে হাত উঁচু করে গাড়ী দাঁড় করিয়ে অনেক দূর হতে আসতে থাকা যাত্রীদের ও গাড়ীতে তোলা হতো। গাড়ী চলতো প্রায় ঘন্টা খানেক পর পর। অধিকাংশ মানুষ স্বপ্ল দূরত্বের পথ পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিতেন।
ঠিক তেমনি ডুংরিয়া, তেঘরিয়া, সুলতানপুর, পাব্বতীপুরের মানুষ সিলেট-সুনামগন্জ্ঞ যাওয়ার জন্য রাস্তায় উঠে একটি জায়গায় জড়ো হতেন এবং সেখান থেকেই গাড়ীতে উঠতেন।
স্বাধীনতার পর ৭৫ সালেই রাস্তা সুন্দর একটি পূর্ণাঙ্গ রুপ পায়। তখনও মানুষ সরকারী জায়গায় স্হাপনা নির্মানে ভয় পেতো। ৮১/৮২ সাল নাগাদ সুলতানপুর ও পার্বতীপুর গ্রামের জনৈক ব্যাক্তিদ্বয় একটি বাদাম ( পাল, চাদরের মত কাপড় বিশেষ) টাঙ্গিয়ে একটি ব্রেঞ্চ দিয়ে সেখানে অস্হায়ী এক চা’ষ্টলের ব্যাবস্হা করেন। ধীরে ধীরে সেখানে আশে-পাশের মানুষ চা খাওয়ার ও বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জড়ো হতেন।
সেই আড্ডাতেই আলাপ-আলোচনায় স্হানের নামের বিষয়টি চলে আসে। জানিনা কোন এক মহান ব্যাক্তি, বিভিন্ন গ্রামের মানুষের সমাগম থাকায় এবং সৌহার্দ্য ও ভাতৃত্ব বজায় রাখার স্বার্থে “শান্তিগন্জ্ঞ” নামটি মুখে আনেন। সেই থেকে নামটি ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে।
একটি স্বনামধন্য এন জি ও ১৯৮৪ সালে “এফ আই ভি ডি বি” প্রতিষ্ঠার পর, এলাকার নামটি পূর্ণাঙ্গ পাকাপোক্ত ভাবে প্রতিষ্ঠা পায়।
এমনিভাবে একটি এলাকা “শান্তিগন্জ্ঞ” নাম ধারন করে।
মনে রাখা প্রয়োজন, শান্তিগন্জ্ঞ কোন গ্রাম নয়, এককভাবে কোন গোষ্ঠি বা গোত্র বা কোন এলাকার নয়।
এটা সবার এক অধিকারের জায়গা।
আমি যখন ১৯৯৭ সালে নাইন্দা নদীর উপর শান্তিগন্জ্ঞের পাশে ব্রীজ নির্মান করি, তখন এলাকার মুরুব্বিয়ানগনের মারফত নামকরণের বিষয়টি জানতে পারি। ধন্যবাদ।
(রেজাউল আলম নিক্কু: সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। জেলা আওয়ামী লীগ নেতা।)
লেখকের ফেইসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া