বিশেষ প্রতিনিধি, তাহিরপুর
::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে দীর্ঘদিন ধর্ষন করেছে এক বখাটে যুবক। এক পর্যায়ে প্রতারিত ওই কিশোরী অন্তস্বত্তা হয়ে পড়লে ধর্ষকের মা তাকে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাতের ওষুধ সেবনে বাধ্য করেছে। এঘটনায় ধর্ষিতার বাবা থানায় ধর্ষক যুবক, তার মা ও বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ, ভিকটিমের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার ৫নং বাদাঘাট ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামের ১৮ বছরের কিশোরিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করছিল একই গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে ইকবাল মিয়া (২৩)।
জানা গেছে ধর্ষক ইকবাল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিমকে উত্যক্ত করে আসছিল। এতে সাড়া না পেয়ে এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ২৫ মে রাতে কিশোরির বাড়ির পাশে জনৈক আব্দুর রহমানের গাছের বাগানে নিয়ে প্রথমে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে প্রতারিত কিশোরি তার পরিবারকে এ ঘটনা জানালে তার পিতা ধর্ষকের পিতাকে ঘটনা খুলে বলে প্রতিকার চান। এক পর্যায়ে ধর্ষক ইকবাল আরো বেপরোয়া হয়ে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরিকে একাধিকবার ধর্ষন করে অন্ত:সত্বা করে। অন্তস্বত্তা হওয়ার পর মেয়েটি বিয়ের চাপ দিলে
নানা অজুহাত কালক্ষেপন করে। গত ২৫ জুন রাতে ধর্ষকের মা শামসুন নাহার কিশোরিকে তার বসত ঘরে ডেকে নিয়ে জোড়পূর্বক গর্ভপাতের ওষুধ সেবন করান। গত ২৮জুন কিশোরির গর্ভপাত ঘটে। তখন এ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আলোচিত হয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ভিকটিম কিশোরির পিতাকে আইনী আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
শনিবার সকালে কিশোরির বাবা এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মামলায় ধর্ষক ইকবাল, তার বাবা ও মাকেও আসামি করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাহিরপুর থানার এসআই মো. হুমায়ুন কবির শনিবার রাতে ধর্ষক ইকবালকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল ধর্ষনের কথা স্বীকার করেছে। তার সঙ্গে এ ঘটনায় আরো দুইজনও জড়িত বলে জানিয়েছে সে।
তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, ধর্ষক ইকবালকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং গর্ভপাতকৃত শিশুর ময়না তদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রগের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।