সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, থেকে :
গত সপ্তাহে পাহাড়ীঢল ও টানা বর্ষণে তাহিরপুর উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় অর্ধ্ব শত গ্রামের মানুষ পানিবন্ধি থাকার পর ফের তাহিরপুর উপজেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে প্রায় ১০দিন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে তাহিরপুর উপজেলার বিন্নাকুলী, লামাশ্রম, মোদেরগাও, কামালপুর, রহমতপুর, গাঘড়া, গড়কাটি, পাঠানপাড়া, কোনাটছড়া, দিঘিরপাড়, সোহালা, ইয়বপুর, নুরপুর, মল্লিকপুর, ননাই, ভোলাখালী, ভাদলারপাড়, সোনাপুর, কুকুরকান্দি, ধরুন, ইউনুছপুর, কাঞ্চনপুর, ইসলামপুর, পাতারগাও, দক্ষিনক’ল, মাহতাবপুর, পিরিজপুর, নয়াহাঠ, আনোয়ারপুর, বালিজুরী, পাতারি, তিওরজালাল, বারুঙ্কা, চিকসা, বীরনগর, জয়নগর, উজানতাহিরপুর, ভাটিতাহিরপুর, রতনশ্রী, শাহাগঞ্জ, সোলেমানপুর, সিলানিতাহিরপুর, মন্দিয়াতা, নয়াবন্দ, তরং, শ্রীপুর, বালিয়াঘাট, ডাম্পেরবাজার, বড়ছড়া, টেকেরঘাট, লাকমা, লালঘাট, চারাগাও, কলাগাও, বাগলী, বীরেন্দ্রনগরসহ প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এসব এলাকার গস্খামীণ ছোট ছোট রাস্তা ঘাট, ব্রীজ, কার্লভাট ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা প্রায় বিচ্ছিন রয়েছে। গত দু’দিন ধওে উপজেলার বাগলী শুল্ক ষ্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন, বাগলী চুনাপাথর ও কয়লা আমদানীকারক সমিতির সভাপতি আব্দুল খালেক মাষ্টার, সহ সভাপতি উমরআলী, কোষাধক্ষ ডা. মনির হোসেন, সদস্য আলী হোসেন। স্থানীয় কৃষকলীগ নেতা গোলাম মস্তুফা ও স্থানীয়ই উপিসদস্য আবুল কালাম জানিয়েছেন, এসব এলাকার স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ মন্দিরের ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলার বাণ্যিজিক কেন্দ্র বাদাঘাটে গত দু’দিন ধরে গস্খামীণ ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। এশাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে গস্খামীণ ফোনের নেটওয়ার্ক খারাপ থাকলে কতৃপক্ষ নজর দিচ্ছেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়রম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা বেগম, সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবুল বাশার, বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিনপ্রমুখ।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজ জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ১১৫জনকে ১৫ কেজি করে ত্রাণ দেয়া হয়েছে, আজ আরো ১২০জনকে ত্রাণ দেয়া হবে। তিনি আরো জানান পর্যায়ক্রমে বন্যা কবলিত আরো ২৬৫ জনকে ত্রাণ দেয়া হবে। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণের পরিমাণ অনেক কম দেয়া হচ্ছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্থ সকলকেই প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৮৭ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এয়াড়াও জেলার ছোট বড় সকল নদ নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জ জেলায় ১৬৮ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা আগামী তিন দিন অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।